কিশোরগঞ্জের সাবেক ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আবার দুদকের মামলা

সেতাফুল ইসলামছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের সাবেক ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. সেতাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে আবার মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। জনগণের ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ ক্ষতিপূরণের পাঁচ কোটি টাকার মধ্যে পৌনে চার কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং প্রায় ৯ কোটি টাকা গরমিলের অভিযোগে এ মামলা করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার দুদক কিশোরগঞ্জ জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহাথীর মুহাম্মদ সামী।

মামলায় কিশোরগঞ্জ কালেক্টরেট সাবেক ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. সেতাফুল ইসলামসহ মোট ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। বাকি আসামিরা হলেন জেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ের সাবেক অডিটর মো. সাইদুজ্জামান, বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, কে এ আল মামুন, মো. কামরুজ্জামান, মো. জাহাঙ্গীর আলম, মো. আনিছুর রহমান, মোহাম্মদ মাহমুদ হোসেন শিমুল, রায়হান উদ্দিন, জিলন খান, আবুল কালাম ও আবদুল হামিদ।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩-১৪ সালে ভৈরবের বিসিক শিল্পনগরী প্রকল্প, ২০১৪-১৫ সালে বাজিতপুর উপজেলা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, ২০১৪-১৫ সালে অষ্টগ্রামের চৌদন্ত সড়ক প্রকল্প এবং ২০১৪-১৫ সালে উজানচর-বাজিতপুর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের মূল্য বাবদ (চারটি এলএ কেসের বিপরীতে) ১২টি চেকের মাধ্যমে মোট ৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা দেওয়া হয়। চেকগুলো গ্রহণ করেন যথাক্রমে আবদুল্লাহ আল মামুন, কে এ আল মামুন, মো. কামরুজ্জামান, মো. জাহাঙ্গীর আলম, মো. আনিছুর রহমান, মোহাম্মদ মাহমুদ হোসেন শিমুল, রায়হান উদ্দিন, জিলন খান, আবুল কালাম ও আবদুল হামিদ নামের ১০ জন ব্যক্তি। কিন্তু তাঁরা কেউই এসব প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি নন।

এর আগে কিশোরগঞ্জে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) একটি প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য মোট ৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে সেতাফুলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ২০১৮ সালে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদক ময়মনসিংহ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাম প্রসাদ। এটির অভিযোগপত্র দাখিল শেষে বর্তমানে বিচারাধীন আছে।

মামলায় বলা হয়েছ, ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের আবেদন গ্রহণের পর কোনো মালিকানা স্বত্বের প্রমাণ ছাড়াই মিথ্যা তথ্য দেন ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সেতাফুল ইসলাম। এভাবে ১২টি চেক বিতরণের নামে মোট ৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। এ ছাড়া তিনি এসব চেকসহ অন্য এলএ চেক নগদায়নের জন্য ভুয়া অ্যাডভাইস তৈরি ও বিভাগকে না জানিয়ে এসব চেক বিভিন্ন ব্যক্তিকে দেন। এতে চারটি প্রকল্পের মোট ৮ কোটি ৯৬ লাখ ৫৭ হাজার ৩৬ টাকার গরমিল ধরা পড়ে। এসব চেক নগদায়নসহ পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলেন জেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ের প্রাক্তন অডিটর মো. সাইদুজ্জামান।

এর আগে কিশোরগঞ্জে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) একটি প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য মোট ৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে সেতাফুলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ২০১৮ সালে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদক ময়মনসিংহ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাম প্রসাদ। এটির অভিযোগপত্র দাখিল শেষে বর্তমানে বিচারাধীন আছে। এ অভিযোগে ২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি সেতাফুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে আগের মামলায় সেতাফুলসহ অন্য আসামিরা জামিনে আছেন।

দুদক কিশোরগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহাথীর মুহাম্মদ সামী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সেতাফুল ইসলাম বর্তমানে রাজশাহী জেলার পটিয়া এলাকার নিজ বাড়িতে আছেন।