নীলফামারীতে জিপিএ-৫ উৎসবে শিক্ষার্থীদের আনন্দ–উচ্ছ্বাস
মেঘলা আকাশ, ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে অনুষ্ঠানে আসতে শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। কেউ এসেছে অভিভাবকের সঙ্গে। বন্ধুদের সঙ্গে জোট বেঁধেও এসেছে অনেকে। উপস্থিত শিক্ষার্থীরা সবাই এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে নীলফামারী সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে তাদের জন্য এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
ক্রেস্ট ও নাশতা বিতরণের মধ্য দিয়ে সকাল নয়টায় আয়োজনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। তবে সাড়ে আটটার আগেই শিক্ষার্থীরা উৎসবের স্থানে আসতে শুরু করে। একে অপরকে কাছে পেয়ে সহপাঠী-বন্ধুদের যেন উচ্ছ্বাসের শেষ নেই। পরস্পরকে জড়িয়ে ধরা ও মুঠোফোনে স্মৃতি ধরে রাখতে সেলফি তোলে তারা। আষাঢ় মাসে এই আয়োজনের জন্য বিদ্যালয়ের মাঠে তৈরি করা হয়েছে বড় প্যান্ডেল। উৎসবে অংশ নিতে জিপিএ-৫ পাওয়া ৯৪১ জন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছে। সকাল ১০টার দিকে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের মূল পর্ব শুরু হয়।
‘স্বপ্ন দেখো জীবন গড়ো’ স্লোগানে সারা দেশের ৬৪টি জেলায় প্রথম আলোর আয়োজনে ও শিক্ষার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘শিখো’র পৃষ্ঠপোষকতায় শুরু হয়েছে জিপিএ-৫ উৎসব।
আয়োজনটি পাওয়ার্ড বাই বিকাশ এবং সহযোগিতায় থাকছে কনকর্ড গ্রুপ, ফ্রেশ, বহুব্রীহি, সানকুইক, কনকা-গ্রি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাস, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা।
অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ২৪ কিলোমিটার দূরের উপজেলা জলঢাকা থেকে মেয়ে সুমাইয়া চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন মা নাসরিন চৌধুরী। পেশায় তিনি একজন গৃহিণী। নাসরিন চৌধুরী বলেন, ‘গতকালই মেয়েকে নিয়ে এই অনুষ্ঠানের জন্য নীলফামারী শহরে এসেছি। রাতে ভাইয়ের বাসায় ছিলাম। খুবই ভালো লাগছে। মেয়ের পরীক্ষার অল্প কিছুদিন আগে ওর বাবা মারা গেছেন। আজ ওর বাবা বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন। এ ধরনের আয়োজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসাহ জোগাবে।’
অনুষ্ঠানস্থলে কথা হয় ডোমার উপজেলার চিলাহাটি থেকে আসা হাবিবুর রহমানের সঙ্গে। সে এবার চিলাহাটি মার্চেন্ট উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। সে বলল, ‘আমরা পাঁচ বন্ধু মিলে ভোরের ট্রেনে এসেছি। রাতভর বৃষ্টি হয়েছে। এ জন্য খুব চিন্তায় ছিলাম। শেষ পর্যন্ত আসতে পেরে খুব ভালো লাগছে।’
আমরা পাঁচ বন্ধু মিলে ভোরের ট্রেনে এসেছি। রাতভর বৃষ্টি হয়েছে। এ জন্য খুব চিন্তায় ছিলাম। শেষ পর্যন্ত আসতে পেরে খুব ভালো লাগছে।হাবিবুর রহমান, শিক্ষার্থী
সকাল নয়টায় আয়োজনের শুরুতে নির্দিষ্ট বুথের সামনে দাঁড়িয়ে ক্রেস্ট ও স্ন্যাকস সংগ্রহ করে শিক্ষার্থীরা। এরপর নীলফামারী বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আয়োজনের মূল পর্ব। আয়োজনে গুণীজনের দিকনির্দেশনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও চলছে। অনুষ্ঠানে জেলার ১০ গুণী শিক্ষককে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
সংবর্ধনায় শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে ক্রেস্ট, ডিজিটাল সার্টিফিকেট, শিখোর পক্ষ থেকে বিশেষ শিক্ষাবৃত্তি, ফ্রেশ ব্র্যান্ডের স্ন্যাকস, সানকুইকের ফ্রুট জুস, প্রথম আলো ই-পেপার (তিন মাস) ফ্রি সাবস্ক্রিপশন, প্রথমা ডটকমে অনলাইনে বই অর্ডারে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়, প্রথমা প্রকাশনের বিক্রয়কেন্দ্রে প্রথমা প্রকাশন ও প্র প্রকাশনের প্রকাশিত বইয়ে ৩০ শতাংশ ছাড়, কিশোর আলো ও বিজ্ঞানচিন্তার ৬ মাসের প্রিন্ট ভার্সনের সাবস্ক্রিপশনে বিশেষ ছাড়।