মেয়ে নিখোঁজ বলে মাইকিং, পরে বাবার তথ্যে মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধার

শিশু মাবিয়া আক্তার
ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলায় পাঁচ বছর বয়সী মেয়েকে হত্যার পর লাশ মাটিচাপা দেওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। তাজুল ইসলাম নামের ওই ব্যক্তির তথ্যে আজ রোববার সন্ধ্যায় মাটি খুঁড়ে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পূর্ব জোড়কানন ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা নির্ভয়পুর গ্রামে। শিশুটির নাম মারিয়া সুলতানা (৫)। তাজুল ইসলাম (৪২) তাঁর স্ত্রী রেহেনা আক্তার ও মেয়ে মারিয়াকে নিয়ে নির্ভয়পুর আদর্শ গ্রামে (গুচ্ছ গ্রাম) থাকতেন।

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, রোববার বিকেলে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে নির্ভয়পুর গ্রামে পুলিশ পাঠানো হয়। সেখানে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পুলিশ অভিযুক্ত পিতা তাজুল ইসলামকে আটক করে। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যমতে বাড়ির পাশের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নির্ভয়পুর গ্রামের চিতাখলা নামক স্থানে জঙ্গলের ভেতর পুঁতে রাখা অবস্থায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় বিজিবির সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

শিশুটির গলার ডান পাশে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে ওসি আরও বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। সোমবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। অভিযুক্ত তাজুল পুলিশ হেফাজতে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

পূর্ব জোড়কানন ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল মতিন বলেন, তাজুল ইসলাম মূলত সিলেটের বাসিন্দা। সাত-আট বছর আগে গুচ্ছ গ্রামে বসতি গড়েন। এরপর এখানেই বিয়ে করেন। শুক্রবার থেকে তাঁর মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। মেয়ে হারিয়ে গেছে বলে এলাকায় মাইকিংও করেন তাজুল। রোববার বিকেলে স্থানীয় লোকজন দুর্গন্ধ পেয়ে সন্দেহজনকভাবে তাজুল ইসলাম জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন। এরপর পুলিশের কাছে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন তাজুল।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাজুল ইসলাম পুলিশকে জানান, গত শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে মেয়েকে নিয়ে তিনি গাছের চারা রোপণ করতে জঙ্গলে যান। একপর্যায়ে মেয়েকে একটি গাছের ডাল নিয়ে আসতে বলেন। কথা না শোনায় ক্ষিপ্ত হয়ে হাতে থাকা দা দিয়ে গলায় কোপ দিলে মারিয়া ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে দ্রুত তাকে পাশে চিতাখলা নামক স্থানে মাটিচাপা দিয়ে বাড়িতে চলে যান।