পাটুরিয়া লঞ্চঘাটে ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের ভিড় বাড়ছে
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া লঞ্চঘাটে ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখী মানুষের চাপ বেড়েছে। ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন জেলার কর্মস্থল থেকে গ্রামের বাড়ি ফিরছেন তাঁরা। এ কারণে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে লঞ্চে যাত্রীদের বেশ ভিড় দেখা গেছে। তবে ফেরিঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ ছিল স্বাভাবিক। কোনো ভোগান্তি ছাড়াই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথ পারাপার হন এসব যাত্রী ও যানবাহনের শ্রমিকেরা।
আজ সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সরেজমিন দেখা যায়, ঢাকা, গাজীপুরসহ আশপাশের জেলা থেকে লোকাল বাসে করে ঘরমুখী যাত্রীরা পাটুরিয়ায় ঘাট এলাকায় আসছেন। লঞ্চঘাট থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে পুরোনো ট্রাক টার্মিনালে থামছে লোকাল বাসগুলো। এরপর যাত্রীরা বাস থেকে নেমে সেখান থেকে হেঁটে মালামাল নিয়ে পাটুরিয়া লঞ্চঘাটের দিকে যাচ্ছেন। পরে টিকিট সংগ্রহ করে লঞ্চে গিয়ে উঠছেন তাঁরা। আবার যাত্রীদের কেউ কেউ ইজিবাইক, রিকশায় করে ফেরিঘাটে যাচ্ছেন। এরপর এসব ফেরিতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথ পারাপার হয়ে নিজ নিজ গন্তব্যের দিকে যাচ্ছেন। লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন রোধে নৌ পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
ঢাকার সাভারে একটি সিরামিকের দোকানে কাজ করেন ফরিদপুরের আলমডাঙ্গা উপজেলার ঘোষভিলা গ্রামের বাসিন্দা মো. ইমন হোসেন (৩০)। আজ সকালে পাটুরিয়া লঞ্চঘাট হয়ে তিনি গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ঈদে বাড়ি যেতে পারিনি। বাড়িতে মা-বাবা, ভাই-বোন আছে। এই ঈদে বাড়িতে যাচ্ছি। তা ছাড়া এলাকায় আত্মীয়স্বজন আছে। তাদের সঙ্গে ঈদ করব। এবার ঘাটে এসে কষ্ট হয়নি, সরাসরি লঞ্চে উঠে পড়েছি।’
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার কাটাখালী গ্রামের বাসিন্দা লাল মিয়া (৪০) কাজ করেন সাভারের অদূরে আশুলিয়ায় একটি পোশাককারখানায়। তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। পাটুরিয়া লঞ্চঘাট এলাকায় কথা হলে তিনি বলেন, ‘গতকাল রাতে কাজ করেছি। এ কারণে আজ কাজে যাইনি। ঈদে আগে আগেই বাড়ি যাচ্ছি। মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়স্বজনসহ সবার সঙ্গে দেখা হয়, কথা হয়। এবার এই ঘাটে আসতে রাস্তায়ও (ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক) কোনো ভোগান্তি হয়নি।’
দ্মা নদীতে পানি বাড়ার কারণে প্রচণ্ড স্রোত বইছে। এই স্রোতের প্রতিকূলে লঞ্চগুলোকে চলাচল করতে কিছুটা বেশি লাগছে। স্বাভাবিক অবস্থায় ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যেই পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়া প্রান্তে চলাচল করতে পারে লঞ্চগুলো। তবে স্রোতের কারণে সময়ে বেশি লাগছে।
বিআইডব্লিউটিএর আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ৩৪টি লঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পাটুরিয়ায় ২২টি ও আরিচায় ১২টি লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হবে। এ ছাড়া আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে যাত্রী পারাপারে ৪৮টি স্পিডবোট আছে। তবে রাতের বেলায় লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকবে।
সূত্র আরও জানায়, পদ্মা নদীতে পানি বাড়ার কারণে প্রচণ্ড স্রোত বইছে। এই স্রোতের প্রতিকূলে লঞ্চগুলোকে চলাচল করতে কিছুটা বেশি লাগছে। স্বাভাবিক অবস্থায় ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যেই পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়া প্রান্তে চলাচল করতে পারে লঞ্চগুলো। তবে স্রোতের কারণে সময়ে বেশি লাগছে।
বিআইডব্লিউটিএর আরিচা কার্যালয়ের বন্দর কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ঈদে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন না করতে লঞ্চের মাস্টার ও সুকানিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে স্পিড বোটেও অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে নিষেধ করা হয়েছে।