জাহাঙ্গীরনগরে সুযোগ পেয়েও ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা নাজমুলের
দিনমজুর বাবার সন্তান মো. নাজমুল ইসলাম। তাঁর বাবা অন্যের দরজি দোকানে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করেন। অনেক কষ্টে ছেলেকে লেখাপড়া করিয়েছেন। সেই ছেলে এবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু অর্থের অভাবে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন নাজমুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
নাজমুলের বাড়ি কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের পশ্চিম ছাট গোপালপুর গ্রামে। নাজমুল সম্মান প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ই ইউনিট থেকে মেধা তালিকায় ৮০তম হয়েছেন। এখন তিনি হিসাববিজ্ঞানে পড়ালেখা করতে চান। পরিবারের আর্থিক টানাপোড়েনের কারণে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।
নাজমুল ইসলাম বলেন, তাঁর বাবা অন্যের দোকানে দরজির কাজ করেন। সেখান থেকে যা টাকা পান, সেটা দিয়ে পাঁচ সদস্যের পরিবার কোনোমতে চলে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও আনুষঙ্গিক খরচ মিলে এখন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা দরকার। সেই সঙ্গে ভর্তির পর প্রতি মাসে চলার জন্যও টাকা প্রয়োজন। এত খরচের ভার তাঁর দিনমজুর বাবা কীভাবে বহন করবেন, তা বুঝতে পারছেন না।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের ধলডাঙ্গা উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শাখা থেকে জিপিএ-৪ দশমিক ৫ পেয়ে এসএসসি এবং কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন নাজমুল। তিনি তিলাই ইউনিয়নের পশ্চিম ছাট গোপালপুর গ্রামের নজরুল ইসলাম ও ফাহিমা বেগম দম্পতির বড় ছেলে। তাঁর ছোট আরও দুই ভাই লেখাপড়া করে।
নাজমুলের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, তাঁর নিজের কোনো জমিজমা নেই, থাকেন শ্বশুরবাড়িতে। একটি দরজির দোকানে কাজ করে যে টাকা পান, তা দিয়ে কোনোরকমে চালান সংসার। ছেলের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন কীভাবে পূরণ করবেন, তা বুঝতে পারছেন না।
তিলাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বলেন, ‘নাজমুল ছোটবেলা থেকে অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া চালিয়েছে। আমাদের সবার প্রচেষ্টা থাকলে নাজমুলের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন পূরণ হবে।’