‘আফনেরা আমার ছেড়াডারে একটু খুঁইজ্জা দেওহাইন’

নিখোঁজ সন্তানের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন রুবেলের মা-বাবা। আজ নান্দাইল শহরের নতুন বাজার এলাকায়ছবি: প্রথম আলা

‘আফনেরা তো কত কিছু করতাইন পারুইন। আফনেরা আমার ছেড়াডারে একটু খুঁইজ্জা দেওহাইন। পুতডারে দেকলে আমার পরানডা জুড়াইবো। আমার পুতেরে আইন্যা দেইন।’ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় নিখোঁজ সন্তান রুবেল মিয়ার (২৫) সন্ধান চেয়ে সাংবাদিকদের কাছে এভাবেই আকুতি জানাচ্ছিলেন আনোয়ারা বেগম নামের এক মা।

রুবেল মিয়া ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের ধুরুয়া গ্রামের মো. মতিউর রহমানের ছেলে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে নতুন বাজার এলাকায় একাধিক সাংবাদিকের কাছে ছেলের সন্ধান চেয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান রুবেলের মা-বাবা।

রুবেল মিয়া
ছবি: সংগৃহীত

মা আনোয়ারা বলেন, কাজ দেওয়ার কথা বলে রুবেলকে কিছুদিন আগে কুমিল্লায় নিয়ে গিয়েছিলেন প্রতিবেশী যুবক সোহেল মিয়া। সেখানে নগরীর তালতলা চৌমুহনী সৈয়দবাড়ি এলাকার এক গ্যারেজ থেকে ভাড়ায় অটোরিকশা চালানো শুরু করেন রুবেল। গত ১৫ জুলাই রাতে অটোরিকশাটি মালিকের গ্যারেজে জমা দেওয়ার পর থেকে তাঁর কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের শাটডাউন কর্মসূচি শুরু হলে সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর আগেই কুমিল্লা থেকে ময়মনসিংহের নান্দাইলে ফিরে যান সোহেল।

আনোয়ারা বেগম জানান, তিনি ছেলের খোঁজখবর জানতে চাইলে প্রসঙ্গটি এড়িয়ে যান সোহেল। পরে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে দুই দিন আগে কুমিল্লায় যান আনোয়ারা। সেখানে হাসপাতাল, কারাগারসহ বিভিন্ন স্থানে ছেলের খোঁজ করেন তাঁরা। কিন্তু কোথাও ছেলের কোনো সন্ধান পাননি। পরে গত মঙ্গলবার কুমিল্লার কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করা হয়।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল। তিনি বলেন, ছেলেটির সন্ধান পাওয়া গেলে স্বজনদের জানিয়ে দেওয়া হবে।