নাটোরে মালিকবিহীন এক ঘোড়া নিয়ে বিপাকে গ্রামের মানুষ
মালিকবিহীন একটি ঘোড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজীপুর ইউনিয়নের চরপিপলা গ্রামের মানুষ। এক মাস ধরে গ্রামের রাস্তার ধারে বাঁধা থাকলেও ঘোড়াটির প্রকৃত মালিককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে স্থানীয় লোকজনের খাদ্যসহায়তা ও পরিচর্যায় ঘোড়াটি বেঁচে আছে।
চরপিপলা গ্রামের পল্লিচিকিৎসক আল আমিন হোসেন বলেন, চরপিপলা গ্রামের মোতালেব হোসেন নামের এক ব্যক্তি এক মাস আগে মালিকহীন ঘোড়াটি গ্রামের রাস্তায় দেখতে পান। পরে তিনি রাস্তার পাশে ঘোড়াটি বেঁধে রাখেন। এর পর থেকে ঘোড়াটি সেখানেই আছে। রাতেও ঘোড়াটি সেখানেই থাকে। এলাকার মানুষ ঘোড়াটির দেখভাল করছেন।
আজ বুধবার দুপুরে এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ঘোড়াটি গ্রামের রাস্তার ধারে বাঁধা আছে। ঘোড়াটির স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। ঘোড়াটির প্রকৃত মালিককে খুঁজে পেতে নানাভাবে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
গত সোমবার চরপিপলা গ্রামে সরেজমিন ঘোড়াটি দড়ি দিয়ে বাঁশের সঙ্গে বাঁধা দেখা যায়। ঘোড়া দেখতে ভিড় করেছে কয়েকটি শিশু। আরেক ব্যক্তি ঘাসজাতীয় তৃণলতা খেতে দিচ্ছেন।
খুবজীপুর ইউপির সদস্য মো. মুন্নাফ হোসেন বলেন, গ্রামের মানুষ প্রথমে ভেবে নিয়েছিলেন ঘোড়াটি হয়তো মোতালেব হোসেনের কোনো পরিচিতজনের। এ কারণে ঘোড়টির পরিচর্যা ও খাবার নিয়ে কেউ ভাবেননি। পরে দেখা গেল ঘোড়াটিকে কেউ খাবার দিচ্ছেন না, পরিচর্যাও করছেন না। এতে ঘোড়াটি দুর্বল হয়ে যাচ্ছিল। পরে এলাকার লোকজন ঘোড়টির পরিচর্যা ও খাদ্যসরবরাহ করতে থাকেন।
কয়েকজন গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে ঘোড়াটিকে খাবার দিলে ঠিকমতো খায় না। অঝোরে চোখের পানি ঝরে। ঘোড়াটিকে কে বা কারা গ্রামে রেখে গেছেন, এ বিষয়ে তাঁরা কিছু বুঝতে পারছেন না।
খুবজীপুর ইউপির চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম বলেন, ঘোড়ার সংবাদটি পাওয়ার পর থানা-পুলিশকে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি ঘোড়াটির নিরাপত্তায় গ্রাম পুলিশ সদস্য সেখানে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজশাহী বন বিভাগের সমন্বয়ক মো. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ঘোড়াটির ছবি সংগ্রহ করে বিভিন্ন পার্ক কর্তৃপক্ষের কাছে দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই ঘোড়াটিকে উদ্ধার করে ভালো জায়গায় স্থানান্তর করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেলা প্রশাসকের অনুমতি সাপেক্ষে ঘোড়াটি উদ্ধার করে কোনো চিড়িয়াখানায় দিয়ে দিতে পারেন বলে জানিয়েছেন গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনোয়ারুজ্জামান।
গুরুদাসপুরের ইউএনও শ্রাবণী রায় বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।