ফরিদপুরে শামীম হকের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে এ কে আজাদের আপিল
ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শামীম হকের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে আপিল করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ। আপিলে দাবি করা হয়েছে, শামীম হক নেদারল্যান্ডসের নাগরিক। এ বিষয়ে তথ্যপ্রমাণও হাজির করা হয়েছে। আজ শুক্রবার এ কে আজাদের পক্ষে তাঁর আইনজীবী মো. গোলাম কিবরিয়া নির্বাচন কমিশনে আপিল আবেদন জমা দেন।
শামীম হক ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এ কে আজাদ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য।
এ কে আজাদের আইনজীবী মো. গোলাম কিবরিয়া সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শামীম হক নেদারল্যান্ডসের নাগরিক—মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় তথ্যপ্রমাণসহ স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। তা সত্ত্বেও রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম হকের মনোনয়নপত্র বাতিল না করে বৈধ ঘোষণা করেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার এই আদেশের বিরুদ্ধে আজ আপিল করা হয়েছে।
শামীম হক সম্প্রতি তাঁর বাংলাদেশি পাসপোর্ট ইস্যু করার জন্য ফরিদপুর পাসপোর্ট কার্যালয়ে দরখাস্ত দাখিল করেন। সেই দরখাস্তের ২৫ নম্বর কলামে দ্বৈত নাগরিকত্বের ঘরে তিনি টিক চিহ্ন দিয়েছেন। ২৬ নম্বর কলামে অন্য দেশের নাগরিক থাকলে সেই দেশের নামের জায়গায় নেদারল্যান্ডস উল্লেখ আছে।
শামীম হক পাসপোর্টের দরখাস্তে দ্বৈত নাগরিকত্বের ঘরে তিনি টিক চিহ্ন দিয়েছেন। অন্য দেশের নাগরিকত্বের ঘরে নেদারল্যান্ডস উল্লেখ করেছেন।
শামীম হকের মনোনয়নপত্র বাতিলের জন্য যুক্তি হিসেবে তাঁর নেদারল্যান্ডসের পাসপোর্টের ফটোকপি প্রমাণস্বরূপ উপস্থাপন করে আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া বলেন, সংবিধানের ৬৬ (২) অনুচ্ছেদ এবং ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১২ (১) (৬) অনুচ্ছেদের বিধানমতে, শামীম হক একজন বিদেশি নাগরিক হওয়ায় তিনি সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারে না। তিনি অযোগ্য প্রার্থী। এ ছাড়া তিনি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (১২) (২) (ক) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রদত্ত হলফনামায় এই বিষয়টি গোপন করায় তাঁর ঘোষণাটি মিথ্যা ঘোষণা হিসেবে বিবেচিত হবে এবং সে কারণেও তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার কথা।
সংবিধানের ৬৬ (২) (গ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার এবং সংসদ সদস্য থাকার যোগ্য হবেন না, যদি তিনি কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন কিংবা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করেন। সংবিধানের ওই অনুচ্ছেদের অনুরূপ বিধানই গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১২ (১) (৬) অনুচ্ছেদে সন্নিবেশিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শামীম হক আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি নেদারল্যান্ডসের নাগরিক ছিলাম। তবে আমি সম্প্রতি ওই নাগরিকত্ব প্রত্যাহারের জন্য নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। এ–সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন নেদারল্যান্ডসের বাংলাদেশ দূতাবাসে এসেছে। নেদারল্যান্ডসের দূতাবাস জানিয়েছে, আমার আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ্রুত এটি কার্যকর করা হবে।’