কুমিল্লায় ধারের ১০ হাজার টাকা নিয়ে বিরোধ, সালিসে যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় ১০ হাজার টাকা পাওনা নিয়ে সালিস বৈঠক চলাকালে এক যুবককে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আরও তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের নবীপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রাজিব হোসেন (৩২) উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামের মৃত খলিল মিয়ার ছেলে। আহত ব্যক্তিরা হলেন নবীপুর গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী মোজাফ্ফর হোসেন, তাঁর ছেলে আক্তার হোসেন এবং জসিম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ঘটনাস্থল থেকে মারুফ হোসেন (১৯) নামের একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন স্থানীয় লোকজন। মারুফ উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের মোচাগড়া গ্রামের বাসিন্দা।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আক্তার হোসেনের স্ত্রী রাবেয়া বেগম জানান, তাঁর ননদ নিলুফা বেগম উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের শিরিনা বেগমের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ধার নিয়েছেন। সেই টাকা পরিশোধ করতে না পারায় বিষয়টি নিয়ে কয়েকবার সালিস হয়েছে। পাওনা টাকার জন্য তাঁর ননদ ও স্বামীকে তুলে নিতে গতকাল রাতে শিরিন প্রায় ১০ জনের একটি দল নিয়ে বাড়িতে আসে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এরপর স্থানীয় লোকজন বিষয়টি মীমাংসার জন্য উভয় পক্ষকে নিয়ে নবীপুর বাজারে কামাল হোসেনের অফিসে সালিস বৈঠক বসে। এরই মধ্যেই শিরিনের লোকদের হামলায় হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন জানান, সালিস চলাকালে অফিসের বাইরে শিরিন বেগমের সঙ্গে আসা মারুফ, মারফতসহ কয়েকজন রাবেয়া বেগমকে লাথি মেরে ফেলে দেয়। এ সময় রাবেয়ার স্বামী আক্তারের হোসেনের বন্ধু রাজিব হোসেন তাঁকে উঠাতে যান। এ সময় অন্যরা কোমর থেকে ছুরি বের করে রাজিবের বুকে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। এ সময় রাজিবকে বাঁচাতে এলে তাঁর বন্ধু আক্তার হোসেন, আক্তারের বাবা মোজাফ্ফর এবং চাচা জসিম উদ্দিনকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে হামলাকারীরা।
পরে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে মারুফ নামের ওই হামলাকারীকে আটক করেন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাজিব হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল হক আজ শুক্রবার দুপুরে বলেন, হত্যার ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। লাশ উদ্ধারের পর আজ সকালে মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। তাঁরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন।