অসুস্থ বানরটি শারীরিকভাবে দুর্বল, অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছে

সীতাকুণ্ডে নিজ থেকে হাসপাতালে আসা আহত বানরটির চিকিৎসা চলছে চট্টগ্রামের ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) এ এস কাদেরী টিচিং ভেটেরিনারি হাসপাতালে। আজ দুপুরে সিভাসুর ভেটেরিনারি হাসপাতালে
ছবি: জুয়েল শীল

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা অসুস্থ বানরটি এখনো দুর্বল। চট্টগ্রামের ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) এ এস কাদেরী টিচিং ভেটেরিনারি হাসপাতালে বানরটির চিকিৎসা চলছে এখন। নিজের পর্যবেক্ষণে রেখে বানরটির চিকিৎসা দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ভজন চন্দ্র দাশ।

আজ মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে ভজন চন্দ্র দাশ প্রথম আলোকে বলেছেন, বানরটির শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ঘা হয়েছে। হাত, পা, বুকসহ নানা জায়গায় ক্ষত তৈরি হয়েছে। ঘাগুলো অন্তত চার থেকে পাঁচ দিন আগের। গতকাল সোমবার বিকেলে যখন বানরটিকে আনা হয়, তখন সেটি বেশ দুর্বল ছিল। বানরটিকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছে। এর আগে স্যালাইন ও ব্যথানাশক ওষুধ দেওয়া হয়েছে।

ভজন চন্দ্র দাশ বলেছেন, বানরটিকে এখন শল্যচিকিৎসা (সার্জারি) করার সুযোগ নেই। এটিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। আজ আবারও এটিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সুস্থ হতে বেশ কয়েক দিন সময় লাগবে। এখন বানরটিকে ফলমূল খেতে দিতে হবে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, গত এক সপ্তাহ বানরটি তেমন কিছুই খেতে পারেনি।

আরও পড়ুন

বর্তমানে বানরের দেখাশোনা করছেন বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা দীপান্বিতা ভট্টাচার্য। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আজ বানরটিকে আবার ড্রেসিং করা হবে। এ ছাড়া চিকিৎসকেরা আরও ভালোভাবে দেখবেন।

বানরটি যেভাবে হাসপাতালে

প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি জানান, গত ২৮ আগস্ট সীতাকুণ্ডের নামারবাজার এলাকার একটি খুঁটিতে বৈদ্যুতিক শকে আহত হয় বানরটি। খুঁটি থেকে নিচে পড়ে গিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পায় বানরটি। পরে এটি ঘটনাস্থলে থেকে চলে যায়।

আরও পড়ুন

এরপর গত শনিবার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রথমবারের মতো অসুস্থ বানরটিকে দেখা যায়। বৈদ্যুতিক শকে আহত হওয়া বানরটি যন্ত্রণায় কাতর ছিল। শরীরের পেছনের অংশে ছিল গভীর ক্ষত। সেদিন এটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। গত রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো বানরটি হাসপাতালে এসে হাজির হয়। সেদিন বিকেল পাঁচটার দিকে বানরটিকে ড্রেসিং করে প্রথমবারের মতো ব্যান্ডেজ করা হয়। ব্যান্ডেজ করার সময় বানরটি চুপচাপ বসে ছিল। ব্যান্ডেজ শেষে বানরটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশের বনে চলে যায়। পরে গত সোমবার তৃতীয় দিনের মতো আবার হাসপাতালে আসে বানরটি। হাসপাতালে এলে এর ক্ষতস্থান ড্রেসিং করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যকর্মীরা। পরে দুপুরের দিকে বানরটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সস বিশ্ববিদ্যালয়ের এ এস কাদেরী টিচিং হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।