মাদারীপুরে কিশোরদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৫ পুলিশসহ আহত ২০, আটক ৮

কিশোরদের দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর হাসপাতাল থেকেও কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ। শুক্রবার রাতে মাদারীপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালেছবি: প্রথম আলো

মাদারীপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কিশোরদের দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ৫ পুলিশ সদস্যসহ আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। গতকাল শুক্রবার রাত আটটার দিকে সদর উপজেলার পূর্ব রাস্তি পুরোনো ট্রলারঘাট এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে আটজনকে আটক করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহরের লঞ্চঘাট এলাকার নীরব ব্যাপারীর সঙ্গে আধিপত্য নিয়ে পূর্ব রাস্তি এলাকার নাঈম ভূঁইয়ার বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে রাতে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। খবর পেয়ে সদর মডেল থানা-পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পরে তাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর একটি দলও যোগ দেয়। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলতে থাকায় ৫ পুলিশসহ আহত হন অন্তত ২০ জন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে বোমায় গুরুতর আহত রিফাত ঢালীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেলে পাঠিয়েছেন চিকিৎসক। ঘটনাস্থল থেকে আটজনকে আটক করে সদর মডেল থানার পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শী শহিদুল ব্যাপারী বলেন, হঠাৎ করেই অর্ধশত কিশোর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় বেশ কয়েকটি হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয় তারা। এলাকায় ক্ষমতা দেখাতেই এমন কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইউনুস মোল্লা (৪৫), সুমন খান (৩৬) ও রমজান আলী (৩৪), কনস্টেবল নুরুল ইসলাম খান (৪৮) ও কামরুল ইসলাম খান (৪০)।

সংঘর্ষে আহত রিফাত ঢালী, সুরুজ ব্যাপারী, মিলন সরদার ও ফারদিন মুন্সির সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। এই চার কিশোর জানায়, কেন, কার সঙ্গে, কী নিয়ে বিরোধ—এটি তারা জানে না। চারজনেরই ভাষ্য, দুই এলাকার মধ্যে মারামারির খবর পেয়ে তারা নিজ নিজ এলাকার পক্ষে দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মনির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, দুই এলাকার কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মূলত সংঘর্ষ। এতে পাঁচজন পুলিশ আহত হয়েছেন। কিশোর গ্যাংয়ের উভয় পক্ষের আটজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করবে। সংঘর্ষের হোতাদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। এ ছাড়া ওই এলাকায় আবার সংঘর্ষ এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।