নারায়ণগঞ্জে শেখ হাসিনা ও শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর কাঁচপুরে জনি (১৭) নামের এক বাসচালকের সহকারীকে হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নিহত জনির বাবা ইয়াসিন মিয়া বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় মামলাটি করেন। এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মোট তিনটি হত্যা মামলা করা হলো।
নতুন মামলায় শেখ হাসিনা ও শামীম ওসমান ছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানসহ ১৮৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ১২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নিহত জনি নাফ পরিবহনের বাসচালকের সহকারী ছিল। তার বাড়ি সোনারগাঁ উপজেলার আমিনপুর এলাকার বালুয়া দীঘিরপাড় এলাকায়। সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান মামলার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ১৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় ও ১৮ আগস্ট সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় শেখ হাসিনা, শামীম ওসমান ও ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে আরও দুটি হত্যা মামলা করা হয়। এর মধ্যে মাছ ব্যবসায়ী মিলন হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান, শামীম ওসমানসহ ৬২ জনের নাম উল্লেখ করে ১৮ আগস্ট সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন মিলনের স্ত্রী শাহনাজ বেগম। আর শহরের মিশনপাড়া এলাকায় আবুল হাসান স্বজনকে (২০) হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনা, শামীম ওসমানসহ ৪৮ জনের বিরুদ্ধে ১৭ আগস্ট সদর মডেল থানায় মামলা করেন আবুল হাসানের বড় ভাই আবুল বাশার অনিক।
জনি হত্যা মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমান, সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে পণ্ড করতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র, পিস্তল, শটগান, ককটেল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে কাঁচপুর এলাকায় যান। তাঁরা সেখানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, তাঁর ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমান, সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবিউল আমিন রনির নির্দেশে ছাত্র-জনতার উদ্দেশে এলোপাতাড়ি গুলি ও আক্রমণ করা হয়। আসামিরা রাস্তায় অবস্থানরত ছাত্র-জনতার ওপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভীতির সৃষ্টি করেন এবং তাঁদের হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ও মারধর করেন। ওই দিন বিকেল পাঁচটার দিকে আসামিদের ছোড়া গুলিতে বাদীর ছেলের বুকে ও পিঠে গুলি লাগলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন।