ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের ঘাঁটিতে ‘নৌকাডুবি’
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় একটি পৌরসভা ও তিনটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে একটি ছাড়া সব কটিতে পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা। শুধু আলফাডাঙ্গা ইউপিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সোহরাব হোসেন নির্বাচিত হয়েছেন। আলফাডাঙ্গা পৌরসভা, বুরাইচ ও গোপালপুর ইউপিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা নৌকা প্রতীক নিয়ে হেরে গেছেন।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা বরাবরই আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এটি ফরিদপুর-১ সংসদীয় আসনের অন্তর্গত। আগের জাতীয় নির্বাচনে এ সংসদীয় আসনভুক্ত মধুখালী ও বোয়ালমারীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তুলনায় কিছু ভোট কম পেলেও আলফাডাঙ্গার একচেটিয়া ভোট পড়েছে আওয়ামী লীগে।
আলফাডাঙ্গা পৌরসভায় ৪ হাজার ৯৪২ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী (নারকেলগাছ) মো. আলী আকসাদ। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান মেয়র মো. সাইফুর রহমান পেয়েছেন ৩ হাজার ৬৬০ ভোট।
আলফাডাঙ্গা সদর ইউপিতে খুব অল্প ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী সোহরাব হোসেন। তিনি পেয়েছেন ১ হাজার ৯৯০ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. মনিরুজ্জামান (চশমা) পেয়েছেন ১ হাজার ৮৪৬ ভোট।
গোপালপুর ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুল খান (চশমা) ৫ হাজার ২৭৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইনামুল হাসান পেয়েছেন ২ হাজার ৬৭১ ভোট।
বুরাইচ ইউপিতে বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আবদুল ওয়াহাব মিয়া (আনারস) ৩ হাজার ৮৩৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী মনোনীত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য আবদুল আলিম খান পেয়েছেন ৩ হাজার ১৮৩ ভোট।
জানতে চাইলে আলফাডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আকরাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কি, আমরা টাকার কাছে হেরে গেছি। ভোটের আগের রাতে বস্তাভর্তি টাকা ছড়ানো হয়েছে।’ যাঁরা আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁরা সবাই দলের কাছে মনোনয়ন চেয়েছিলেন, না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন মন্তব্য করে স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক তুলে দেওয়ার দাবি জানান আকরাম হোসেন। তিনি আরও বলেন, ‘দলীয় মনোনয়ন অনেকে চান। আমরা সবার নাম কেন্দ্রে পাঠাই। কিন্তু কেন্দ্র থেকে যাঁকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করে, বাকি প্রার্থীরা এক জোট হন তাঁকে হারানোর জন্য। এর ফলে আমরা আশানুরূপ ফল পাচ্ছি না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটায় ইভিএম পদ্ধতিতে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার একটি পৌরসভা ও তিনটি ইউপিতে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। শেষ হয় বিকেল সাড়ে চারটায়।