মুন্সিগঞ্জে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে মঞ্চে বসা নিয়ে হামলা, ভাঙচুর
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপনের সমাবেশস্থলের ব্যানারে নাম ও মঞ্চে চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় অনুষ্ঠানস্থলের চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া এক পক্ষের হামলায় সাংবাদিকসহ প্রতিপক্ষের একজনকে পিটিয়ে আহত করা হয়।
আজ রোববার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের আনারপুরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জেলা আওয়ামী লীগের কথিত যুগ্ম সম্পাদক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল সার্ভিস ব্যবস্থাপনার লাইন পরিচালক মাজহারুল হকের সমর্থকেরা এ হামলা করেন। হামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মনসুর আহমেদ খানের পক্ষে মোহাম্মদ হোসেন (২৫) ও স্থানীয় সাংবাদিক সোলাইমান সিকদার (৩৭) আহত হন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল ইসলাম। নির্বাচনে জয়ী হন সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমেদ খান। নির্বাচনে আমিরুল হকের পক্ষে কাজ করেন মাজহারুল হক ও তাঁর ভাইরা।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাজহারুল ও মনসুরের বিরোধ চলছিল। আজ আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে উপজেলার আনারপুরা এলাকায় সমাবেশে দুই পক্ষ উপস্থিত হয়। এ সময় সমাবেশ চলাকালে মাজহারুল হকের নাম ব্যানারে না থাকায় এবং তাঁর জন্য মঞ্চে কেন চেয়ার রাখা হয়নি, এমন প্রশ্ন তুলে উচ্চবাচ্য করতে থাকেন মাজহারুলের ভাগনে জুয়েল ও তাঁর সমর্থকেরা। সে সময় সবাইকে শান্ত থাকতে বলেন মনসুর। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মনসুরকে গালিগালাজ করেন মাজহারুলের সমর্থকেরা।
একপর্যায়ে তাঁরা মঞ্চের সামনের চেয়ার ভাঙচুর করা শুরু করেন। ঘটনার সময় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। সভাস্থলের পাশেই মনসুরের সমর্থক মোহাম্মদ হোসেনকে চেয়ার দিয়ে পেটানো শুরু করেন মাজহারুলের সমর্থকেরা। ঘটনার চিত্র ধারণ করতে গিয়ে দুই পক্ষের মাঝখানে পড়ে আহত হন সাংবাদিক সোলাইমান সিকদার। প্রায় ২৫-৩০ মিনিট দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। পরে সমাবেশস্থলে উপস্থিত পুলিশ ও অতিথিরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে আবার আলোচনা সভা ও কেক কাটার মাধ্যমে অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ করেন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন স্থানীয় লোকজন।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ হোসেন বলেন, মাজহারুল সরকারি কর্মকর্তা। সরকারি কর্মকর্তা হয়েও তিনি কীভাবে আওয়ামী লীগের দলীয় পদে থাকার দাবি করেন? ব্যানারে নাম না থাকায় তিনি কীভাবে তাঁর লোকজন দিয়ে এমন হামলার ঘটনা ঘটাতে পারেন?
তবে এ বিষয়ে জানতে মাজহারুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
এদিন সমাবেশস্থলে উপস্থিত ছিলেন মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ফয়সাল। তিনি বলেন, ‘আসরের নামাজের সময় মসজিদে গিয়েছিলাম। এসে দেখি, বাঁশ নিয়ে দৌড়াদৌড়ি চলছে। চেয়ার ভাঙচুর করা হচ্ছে। পরে সবাইকে শান্ত করে অনুষ্ঠান শেষ করেছি।’
এ বিষয়ে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিব খান বলেন, ‘সমাবেশস্থলে আমাদের সদস্য মোতায়েন ছিল। তবে হঠাৎ করেই হট্টগোল ঘটেছে। তবে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।’