৬১ ঘণ্টা পর আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি চলাচল শুরু

মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাবনার কাজিরহাট নৌপথে আবার ফেরি চলাচল করছে। আজ বেলা একটার দিকে আরিচা ২ নম্বর ঘাট এলাকায়ছবি: আব্দুল মোমিন

প্রায় ৬১ ঘণ্টা পর মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাবনার কাজিরহাট নৌপথে আবার ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ওই নৌপথে ফেরি চলাচল সচল করা হয়। এ সময় যানবাহন নিয়ে আরিচার ২ নম্বর ঘাট থেকে কাজিরহাট প্রান্তের উদ্দেশে ছেড়ে যায় ধানসিঁড়ি নামের একটি ফেরি।

ফেরি চলাচল শুরু হলেও ঘাট এলাকায় পণ্যবাহী গাড়ির চাপ কমেনি। আজ বেলা দুইটা পর্যন্ত আরিচা ঘাট এলাকায় অর্ধশতাধিক পণ্যবাহী গাড়ি নদী পারাপারের অপেক্ষায় দেখা যায়।

নাব্যতা–সংকটের কারণে নৌপথটিতে দুর্ঘটনা এড়াতে গত শুক্রবার রাত ১১টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)।

আরও পড়ুন

বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ দুই দশক পর ২০২১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি চলাচল চালু হয়। প্রায় ১৪ কিলোমিটার এ নৌপথের আরিচা ঘাটের অদূরে যমুনা নদীতে নৌ চ্যানেলে প্রায় এক মাস ধরে নাব্যতা–সংকট চলছে। কয়েকটি ডুবোচরের কারণে মাঝেমধ্যেই যানবাহন নিয়ে ফেরি আটকে যাচ্ছিল। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে গত শুক্রবার রাত ১১টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এতে দুই ঘাট প্রান্তে আটকা পড়ে দুই শতাধিক পণ্যবাহী যানবাহন। সেখানে দীর্ঘ সময় ধরে আটকে থেকে এসব যানবাহনের চালক ও সহকারীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।

আজ সোমবার দুপুরে আরিচা ঘাট এলাকায় দেখা যায়, ফেরি চলাচল শুরু হলেও আরিচা ঘাট এলাকায় অর্ধশতাধিক পণ্যবাহী যান নদী পারাপারের অপেক্ষায় আছে। এসব যানবাহন আরিচার দুই ঘাট থেকে শিবালয় থানা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত সারিবদ্ধভাবে সড়কের পাশে অবস্থান করছে।

ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে টাইলস তৈরির মাটি নিয়ে বগুড়ায় যাচ্ছিলেন ট্রাকচালক আক্কাস আলী (৫০)। আজ বেলা একটার দিকে আরিচা ফেরির টিকিট কাউন্টারের সামনে আটকে ছিলেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ঘাটে এসে জানতে পেরেছেন ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এর পর থেকে তাঁর সহযোগীকে নিয়ে ঘাটে নদী পারাপারের অপেক্ষায় থেকেছেন।

কাছাকাছি স্থানে আটকে থাকা আরেকটি ট্রাক থেকে আমজাদ হোসেন নামের অপর চালক বলেন, ‘দুই দিন ধরে ঘাটে আটকে আছি। নিজের পকেটের ট্যাকা-পয়সা খরচ করে খাওয়া ও হোটেল ভাড়া দিছি। ঘাটে আটকে থাকলে আমাগোরে বাড়তি খরচ হয়। মালিকেরও আয় কমে যায়।’

বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) নাসির মোহাম্মদ চৌধুরী জানান, যানবাহন নিয়ে ফেরিগুলোকে স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে নদীতে অন্তত ৮ ফুট পানির গভীরতা প্রয়োজন। উজান থেকে পলি পড়ে নৌপথের নাব্যতা–সংকট দেখে দেয়। এ কারণে ডুবোচরে ফেরি আটকে যাওয়ার আশঙ্কায় শুক্রবার রাত ১১টার দিকে এই নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়। নৌপথের চ্যানেলটি স্বাভাবিক রাখতে বিআইডব্লিউটিএর আটটি খননযন্ত্র দিয়ে পলি অপসারণের কাজ করা হয়েছে।