কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলিতে নিহত হৃদয়ের পরিবারের পাশে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে নিহত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার (২২) পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে পটুয়াখালী শহরের মুন্সেফপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় এসে নিহত হৃদয়ের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান তাঁরা।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে পেয়ে হৃদয়ের বাবা রতন চন্দ্র তরুয়া, মা অর্চনা রানী ও বোন নিতু রানী কান্নায় ভেঙে পড়েন। শিক্ষকেরা হৃদয়ের মা–বাবাকে সান্ত্বনা দেন এবং তাঁদের পাশের থাকার কথা বলেন। এ সময় শিক্ষকেরা হৃদয়ের বাবা-মায়ের হাতে ফলের ঝুড়ি ও নগদ কিছু টাকা তুলে দেন। সেই সঙ্গে হৃদয়ের বোনের জন্য পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ারও আশ্বাস দেন।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. হেমায়েত জাহানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে ছিলেন অধ্যাপক মো. জিল্লুর রহমান, অধ্যাপক আবুল বাশার খান, অধ্যাপক আতিকুর রহমান, অধ্যাপক মো. জামাল হোসেন, অধ্যাপক মো. মাসুদুর রহমান, অধ্যাপক সুজাহাঙ্গীর কবীর, অধ্যাপক মামুনুর রশীদ, অধ্যাপক মো. সাইফুল ইসলাম, অধ্যাপক মো. আবদুল মালেক, অধ্যাপক আবু ইউসুফ, অধ্যাপক নেছার উদ্দিন, ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. আমিনুল ইসলাম, শিক্ষক এ বি এম সাইফুল ইসলামসহ ছাত্রছাত্রী সমন্বয়ক প্রতিনিধিরা।
অধ্যাপক মো. হেমায়েত জাহান বলেন, মেধাবী শিক্ষার্থী হৃদয় যেভাবে মারা গেছেন, এটি কারও কাম্য নয়। নিহত হৃদয়ের পরিবারের জন্য যা যা করণীয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তা করা হবে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৮ জুলাই সন্ধ্যায় টিউশনি করে ফেরার পথে চট্টগ্রামের চাটগাঁ আবাসিক এলাকায় আন্দোলনকারীদের পেছনে পড়েন হৃদয়। এ সময় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে তিনি হঠাৎ গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৩ জুলাই ভোর পাঁচটার দিকে তিনি মারা যান।
নিহত হৃদয়ের বাবা কাঠমিস্ত্রি রতন চন্দ্র তরুয়া ও মা অর্চনা রানী। তাঁদের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার ঘটকের আন্দুয়া গ্রামে। অনেক বছর ধরে জেলা শহরে ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন তাঁরা। নিহত হৃদয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।