এবার দুই ট্রলারসহ ৬ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি
টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথ থেকে এবার দুটি ট্রলারের মালামালসহ মাঝিমাল্লাকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় অপহরণের এ ঘটনা ঘটে।
আরাকান আর্মির নিয়ে যাওয়া ট্রলার দুটি হলো আবদুর রশিদের মালিকানাধীন এসবি রাসেল ও আবদুর রবের মালিকানাধীন এসবি ফারুক। আবদুর রশিদ টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন রুটের সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি। ট্রলার দুটি রড, বালু ও সিমেন্ট ভর্তি করে সেন্ট মার্টিন নিয়ে যাচ্ছিল বলে তিনি জানান।
আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দুপুরের দিকে টেকনাফ স্থলবন্দর–সংলগ্ন কেরুনতলী খাল থেকে রড, সিমেন্ট ও বালু বোঝাই করে এসবি রাসেলে ও এসবি ফারুক সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে রওনা দেয়। ছয়জন মাঝিমাল্লাসহ ট্রলার দুটি বঙ্গোপসাগরের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় পৌঁছালে মিয়ানমার থেকে দুটি ট্রলারে আরাকান আর্মির সদস্যরা এসে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে যান বলে সেখানে থাকা কয়েকটি ট্রলারের মাঝিরা তাঁকে জানান। অপহরণের পর ট্রলার দুটিকে মিয়ানমারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আজ বুধবার দুপুর পর্যন্ত তাঁদের ফেরত দেওয়া হয়নি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত কেউ আমাদের বিষয়টি জানাননি। তারপরও বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।’
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ছয়জন মাঝিমাল্লা ও মালামালবোঝাই সার্ভিস ট্রলার দুটি আরাকান আর্মির সদস্যরা অস্ত্রের মুখে ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন বলে তিনি জেনেছেন।
উল্লেখ, এর আগে এ বছরের ১ জুন বিকেলে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথের নাইক্ষ্যংদিয়ায় একটি সার্ভিস ট্রলার লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয় মিয়ানমার থেকে। এরপর ৫ জুন একই স্থানে নির্বাচন কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেটকে বহনকারী নৌযান লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। ৮ ও ১১ জুন একই এলাকায় সেন্ট মার্টিনগামী নৌযান লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। সর্বশেষ গত ১৭ জুলাই টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ বদরমোকাম এলাকা অতিক্রমের সময় দুটি ট্রলার লক্ষ্য করে গুলি করা হয়েছিল। প্রতিটি গুলির ঘটনাই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ জলসীমায় ঘটেছে।
গত ৮ জুনের পর থেকে ওই নৌপথে দিয়ে সার্ভিস ট্রলার চলাচল বন্ধ করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। এর পর থেকে বিকল্প পথে শাহপরীর দ্বীপ, বদরমোকাম, গোলগরা এলাকা দিয়ে নৌযান চলাচল করছিল।