গাজীপুরে বেতনের দাবিতে বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকদের বিক্ষোভ
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সারাবো এলাকায় গত সেপ্টেম্বর মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করছেন। আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভের একপর্যায়ে হাজার দেড়েক শ্রমিক কারখানার সামনে চক্রবর্তী এলাকায় চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করেন। পরে শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেন। এ কারণে প্রায় দুই ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সড়কটিতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কারখানার শ্রমিক ও শিল্প পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুরের সারাবো এলাকায় অবস্থিত বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে প্রায় ২২ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। প্রতি মাসে এখানে বেতন দিতে হয় ৮০ থেকে ৮২ কোটি টাকা। কারখানার শ্রমিকেরা সেপ্টেম্বর মাসেও বেশ কয়েক দিন আন্দোলন ও সড়ক অবরোধ করে বেতন আদায় করেন। চলতি অক্টোবর মাসেও শ্রমিকেরা কয়েক দিন আগে বেতনের জন্য বিক্ষোভ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সপ্তাহে ২৭ কোটি টাকা বেতন দেওয়া হয়। তবে এখনো অনেক শ্রমিক সেপ্টেম্বর মাসে কাজের জন্য বেতন পাননি। বেতনের দাবিতে এক থেকে দেড় হাজার শ্রমিক আজ সকাল ৮টা থেকে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা কারখানার সামনে চক্রবর্তী এলাকায় চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেন। এতে সড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তাঁরা বেতন আদায় করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেন। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কারখানার শ্রমিক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মাসের ১৯-২০ দিন চলে গেলেও বেতন পাচ্ছি না। বেতন না পাওয়ায় ঘরভাড়া, দোকানের বাকি পরিশোধ করতে পারছি না। গত মাসেও আন্দোলন করে বেতন নিতে হয়েছে। প্রতি মাসে এই অবস্থা হলে আমাদের সংসার চালানো কষ্ট হয়ে যাবে।’
প্রায় এক যুগ এই কারখানায় কাজ করছেন শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা আমাদের কথা দিয়েছেন, তাঁরা বেতন আদায় করে দেবেন। পরে আমরা সড়ক অবরোধ ছেড়ে দিয়েছি।’
স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বলেন, অল্প কিছুতেই সড়ক অবরোধ করে মানুষকে দুর্ভোগে ফেলা হচ্ছে। শ্রমিকদের সমস্যা, তারা কারখানায় গিয়ে আন্দোলন করুক। রাস্তায় কেন আসে বলে প্রশ্ন রাখেন তিনি।
শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে সড়কের গাড়ি নিয়ে বের হতে এখন ভয় করে বলে জানান বাসচালক রহিম সরকার। তিনি বলেন, ‘ভাঙচুর না হলেও দীর্ঘ সময় বসে থেকে সময়ও নষ্ট হয়, যাত্রীদের কষ্ট হয়, আবার তেলও ফোরায়।’
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেন, ওই কারখানায় ২৭ কোটি টাকার মতো বেতন দেওয়া হয়েছে। বেতনের বাকি টাকাও দ্রুত পরিশোধ করার জন্য তাদের বলা হয়েছে। শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে অল্প সময় চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। তবে এখন স্বাভাবিক আছে।