রাজশাহী কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সাবেক এমপি রাহেনুল আবারও গ্রেপ্তার
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সাবেক সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা রাহেনুল হককে আবারও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিকে জেলগেটে এসে তাঁর ছেলে রেজাউন উল হক (২৭) অপহৃত হন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে ছাত্রদল নেতাদের মধ্যস্থতায় তিনি ছাড়া পান। গতকাল সোমবার রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।
রাজশাহী-৬ (বাঘা চারঘাট) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রাহেনুল হককে গত ২০ আগস্ট গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল তিনি জামিনে মুক্তি পান। সন্ধ্যার পর তিনি কারাগার থেকে ছাড়া পান। তবে আবারও তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
এ সম্পর্কে রাজশাহী জেলা ডিবির পরিদর্শক রুহুল আমিন জানান, রাজশাহী নগরের সাহেব বাজার এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি রাহেনুল হককে আটক করা হয়েছে। কোন মামলায় তাঁকে আটক করা হয়েছে, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলতে পারবেন।
রাহেনুল হকের স্ত্রী নার্গিস খাতুন চারঘাট পৌরসভার সাবেক মেয়র। নার্গিস খাতুন অভিযোগ করেন, রাজশাহী শহরের কিছু ছাত্রদলের নেতা-কর্মী তাঁর ছেলেকে (রেজাউন উল হক) কারাগারের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যান। গতকাল রাতে জেলগেটে আসেন নগরের রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল আলম। তাঁর কাছে ছেলেকে অপহরণের কথা জানান নার্গিস খাতুন। এ সময় তিনি বলেন, সন্ধ্যার পর তিনি, তাঁর ছেলে, একজন আত্মীয় ও তাঁদের আইনজীবী কারাগারের সামনে আসেন। কিন্তু কারাগারের সামনে বসার জায়গা না পেয়ে তিনি পাশের মোড়ের দিকে যান। আর কারাগারের সামনে অপেক্ষা করছিলেন তাঁর ছেলে ও আইনজীবী। ওই সময় ছাত্রদলের কিছু নেতা-কর্মী এসে আইনজীবীকে মারধর করে রেজাউনকে তুলে নিয়ে যান। এরপর তিনি (নার্গিস) ছেলের মুঠোফোনে কল দেন। তখন রেজাউন জানান, তাঁকে কারাগারসংলগ্ন পদ্মা নদীর ধারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অপহরণকারী ব্যক্তিরা তাঁর কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছেন।
নার্গিস খাতুন ওসিকে আরও জানান, কিছুক্ষণ পর কারাগারের সামনে যুবদল-ছাত্রদলের কয়েকজন আসেন। তাঁরা তাঁদের এক আত্মীয়ের পরিচিত। ছাত্রদল-যুবদলের এই নেতা-কর্মীরা রাজেউনকে উদ্ধারে মধ্যস্থতা করেন। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাঁকে লালন শাহ মুক্তমঞ্চ এলাকায় তাঁর এক মামাতো ভাইয়ের কাছে দেওয়া হয়। তারপর তাঁরা দুজন নগরের সিপাইপাড়া এলাকার বাড়িতে যান।
এ বিষয়ে মহানগর ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মর্তুজা ফামিন প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক এমপির ছেলেকে মুক্তিপণের দাবিতে তুলে নেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়। ওই ছেলের মুঠোফোনে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। এ জন্য ছাত্রদলের কয়েকজন ছেলে তাঁকে পুলিশে দেওয়ার জন্য ধরেছিলেন। পরে আত্মীয়তার একটা সূত্রে পরিচয় হওয়ায় ওই ছেলেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল আলম বলেন, ‘কেউ বিষয়টি আমাদের পুলিশ কমিশনার স্যারকে জানিয়েছিলেন। সেখান থেকে খবর পেয়ে আমি কারাগারের সামনে গিয়ে নার্গিস খাতুনের সঙ্গে কথা বলছিলাম। এর মধ্যেই নার্গিসের মুঠোফোনে কল আসে যে তাঁর ছেলেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ করলে তদন্ত করে দেখা হবে।’