কুমারখালীতে দরবার শরিফে হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চর সাদিপুর বাজারসংলগ্ন রশিদিয়া দরবার শরিফে হামলা-ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। গতকাল রোববার রাতেছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চর সাদিপুর ইউনিয়নে দরবার শরিফে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে চর সাদিপুর বাজারসংলগ্ন রশিদিয়া দরবার শরিফে বার্ষিক ওরস মাহফিল চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে আজ সোমবার কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। হামলার সময় ওই দরবার শরিফে বার্ষিক ওরস মাহফিল চলছিল। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

দরবার শরিফের পরিচালক জিল্লুর রহমানের ছেলে মো. রাসেল বলেন, প্রায় ১৫ বছর আগে এই খানকা শরিফ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন তাঁর বাবা। গ্রামের অনেকেই একত্র হয়ে এই খানকা শরিফে দোয়া মাহফিল ও গানবাজনার আয়োজন করেন। এ ছাড়া প্রতিবছর ওরস মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল ওরস মাহফিল ছিল। রাতে দোয়া মাহফিলের মোনাজাত চলছিল। এ সময় হঠাৎ ১৫–২০ জন লাঠিসোঁঠা নিয়ে দরবার শরিফে হামলা চালান। তাঁরা দরবারের চারচালা ঘরটি ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেন। ভয়ে তিনি, তাঁর বাবা ও ভক্তরা পালিয়ে যান। তবে কাউকে মারধর করা হয়নি।

মো. রাসেল অভিযোগ করেন, গতকাল স্থানীয় মসজিদে এশার নামাজ শেষে হামলাকারী ব্যক্তিরা একত্র হন। এই হামলায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের ইন্ধন ছিল। তিনি হামলার সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, চর সাদিপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে এশার নামাজ শেষ করে ১৫–২০ জন একত্র হন। তাঁরা লাঠিসোঁঠা নিয়ে ওই দরবার শরিফ ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন। হামলাকারী ব্যক্তিদের অভিযোগ ওই দরবার শরিফে মাদক সেবন ও গানবাজনা হয়। সাবেক এক চেয়ারম্যান ও স্থানীয় এক মাদ্রাসাশিক্ষকের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়।

এই অভিযোগ অস্বীকার করে মো. রাসেল বলেন, খানকা শরিফে কোনো মাদক সেবন করা হয় না। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এ বছর ওরসে গানবাজনার আয়োজনও ছিল না। তারপরও হামলা করা হয়েছে।

হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে চর সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দরবার শরিফের নামে সেখানে মাদকের আড্ডা চলে। এ জন্য স্থানীয় ছেলেপেলে তা ভেঙে দিয়েছেন।

চর সাদিপুর ইউপির চেয়ারম্যান মেছের আলী খাঁ এ ঘটনায় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

কুমারখালী থানার ওসি আকিবুল ইসলাম বলেন, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাটি জানার পর সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। সাদিপুর দুর্গম এলাকা। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।