কুড়িগ্রামে ওয়াজ মাহফিলে অতিথি না করায় আয়োজক কমিটির সদস্যদের মারধর

কুড়িগ্রাম জেলার মানচিত্র

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে ওয়াজ মাহফিলের জন্য টাকা সংগ্রহের সময় আয়োজক কমিটির কয়েকজন সদস্যকে মারধর করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার আন্ধারীঝাড় বাজারে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের অভিযোগ, ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথি ও সভাপতি না করায় স্থানীয় বিএনপি ও যুবদলের দুই নেতার অনুসারীরা মারধর করেছেন।

এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। আর আহত অন্যদের মধ্যে মাহফিল আয়োজক কমিটির সদস্য ও স্থানীয় ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আছেন। তবে অভিযুক্ত যুবদল নেতার দাবি, ওয়াজ মাহফিলকে কেন্দ্র করে নয়, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।

মারধরে আহত ব্যক্তি ও ওয়াজ মাহফিল আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা যায়, ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় বাজার দারুল আরকান ক্যাডেট মাদ্রাসায় আজ বুধবার সন্ধ্যায় ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এতে স্থানীয় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতা-কর্মী মাহফিল আয়োজক কমিটির সদস্য। ওয়াজ মাহফিলে স্থানীয় ব্যবসায়ী আবদুল হাকীমকে প্রধান অতিথি ও সোনালী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা আজিজুর রহমানকে সভাপতি করা হয়। তবে এতে আন্ধারীঝাড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও আন্ধারীঝাড় ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি শাহাদৎ হোসেন ক্ষুব্ধ হন। গতকাল সন্ধ্যায় মাহফিল আয়োজক কমিটির সদস্যরা আন্ধারীঝাড় বাজারে চাঁদা আদায় করতে গেলে ইউনিয়ন বিএনপি ও যুবদলের সভাপতির অনুসারীরা তাঁদের ওপর হামলা করেন। এতে আহত হন ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাহারুল ইসলাম (৩৮), ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক বাদল ইসলাম (৪০), যুগ্ম আহ্বায়ক রব্বানী মিয়া, কৌশিক আহমেদসহ ছয় থেকে সাতজন। এর মধ্যে আজাহারুল ইসলামকে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে এবং অন্য ব্যক্তিরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।

আহত আজাহারুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসাটি বাড়ির পাশে হওয়ায় তাঁদের কয়েকজনকে মাহফিল আয়োজক কমিটিতে রাখা হয়েছে। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিকে মাহফিলে সভাপতি ও যুবদলের সভাপতিকে প্রধান অতিথি না করায় তাঁদের ওপর হামলা ও এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়েছে।

দারুল আরকান ক্যাডেট মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মাদ্রাসার বাৎসরিক মাহফিল উপলক্ষে মাদ্রাসার আশপাশের বিএনপির কয়েকজনকে মাহফিল আয়োজক কমিটিতে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। মাহফিল উপলক্ষে তাঁরা বাজারে টাকা সংগ্রহ করছিলেন, হঠাৎ ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল এসে তাঁদের ওপর হামলা করে। মাহফিলে অতিথি হিসেবে নাম থাকা না–থাকা নিয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।

এ অভিযোগ অস্বীকার করে আন্ধারীঝাড় যুবদলের সভাপতি শাহাদৎ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন , ‘মাহফিলে সভাপতি বা প্রধান অতিথি নিয়ে মারধরের ঘটনা ঘটেনি। আমি নিজেও মাহফিলের বিশেষ অতিথি। এ ছাড়া যাঁরা মাহফিলে জড়িত আছেন, তাঁরাও আমাদের দলীয় লোকজন। তাঁদের সঙ্গে আমাদের দ্বন্দ্বের কিছু নেই। বাদল নামের একজন বিভিন্ন সময়ে আমাদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। এসব নিয়ে সামান্য কথা-কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।’

ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।