ওমরাহ করে দেশে ফেরা হলো না সবুজের, মা-বাবার আর্তনাদ
অভাবের সংসারে সবুজের বড় হওয়া। পরিবারের সচ্ছলতার কথা ভেবে প্রায় তিন বছর আগে সৌদি আরব পাড়ি জমান সবুজ। তাঁর পাঠানো টাকায় সচ্ছলতা ফিরতে শুরু করে পরিবারে। শিগগিরই দেশে ফেরার কথা ছিল তাঁর। ফেরার আগে ওমরাহ করার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনা তাঁর জীবন তছনছ করে দিয়েছে।
সৌদি আরবে ওমরাহ যাত্রীদের বাস দুর্ঘটনায় আট বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। তাঁদেরই একজন মো. সবুজ হোসাইন (৩০)। তাঁর মৃত্যুর খবরে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় তাঁর গ্রামের বাড়িতে মাতম চলছে। তাঁর মৃত্যুর খবর শোনার পর সবুজের মা–বাবার আহাজারি থামছেই না। সবুজ রায়পুরের চরমোহনা ইউনিয়নের বাবুরহাট এলাকার রাঢ়ী বাড়ির মাছ ব্যবসায়ী মো. হারুনের বড় ছেলে। চার ভাই–বোনের মধ্যে সবুজ দ্বিতীয়।
গত সোমবার ইয়েমেন সীমান্তবর্তী সৌদি আরবের আসির প্রদেশের আকাবা শার এলাকায় ওই দুর্ঘটনা ঘটে। বাসের আরোহীরা ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে মক্কায় যাচ্ছিলেন। ব্রেক কাজ না করায় একটি সেতুর ওপর উল্টে গিয়ে বাসটিতে আগুন ধরে যায় বলে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক গালফ নিউজের খবরে বলা হয়েছে। এতে মোট ২২ যাত্রী নিহত হন। তাঁদের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি। এ ঘটনায় আরও অন্তত ১৮ জন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। বাসে মোট ৪৭ জন যাত্রী ছিলেন।
রায়পুরার বাবুরহাট এলাকার বাসিন্দারা জানান, সবুজের বাবা হারুন মাছ বিক্রি করেন। আর্থিকভাবে তেমন সচ্ছল নন। বছর তিনেক আগে বড় ছেলে সবুজকে তিনি সৌদি আরবে পাঠান। শিগগিরই তাঁর দেশে ফেরার কথা ছিল। তার আগে ওমরাহ করতে চেয়েছিলেন সবুজ। ওমরাহ করতে যাওয়ার পথে বাস দুর্ঘটনায় তিনি আহত হয়েছিলেন। পরে গতকাল মঙ্গলবার রাতে সৌদি থেকে স্বজনেরা খবর পান, সবুজ মারা গেছেন।
সবুজের বাবা মো. হারুন বলেন, ছেলের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে তাঁরা সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। সরকারি খরচে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাঁর ছেলের লাশটি যেন গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়, সেই দাবি তাঁর।
চরমোহনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সফিক পাঠান বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। ছেলের অকাল মৃত্যুতে স্বজনেরা আহাজারি করছেন। প্রতিবেশীসহ আশপাশের লোকজন ভিড় করছেন তাঁদের বাড়িতে।