সালথায় শিশুদের ঝগড়ার জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক

সংঘর্ষ
প্রতীকী ছবি

শিশুদের ঝগড়ার জেরে ফরিদপুরের সালথায় একই গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৩০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ শনিবার সকাল ছয়টার দিকে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের মেম্বার গট্টি এলাকায় সালথা-ফরিদপুর আঞ্চলিক সড়কের ওপর প্রায় পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষের সময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় ওই সড়কে যান বাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, সংঘর্ষে দুই পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন মেম্বার গট্টি গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. রফিক মাতুব্বর এবং গট্টি ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি মো. আজিজ মোল্লা। গতকাল শুক্রবার বিকেলে গ্রামের শিশুদের খেলার সময় রফিকের সমর্থক নুরুল ইসলামের ছেলের সঙ্গে আজিজের সমর্থক মুকুলের মেয়ের ঝগড়া হয়। এ নিয়ে সন্ধ্যায় উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরই জেরে আজ সকালে ওই দুই পক্ষের লোকজনের দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। সকাল ছয়টার দিকে রফিকের বাড়ির সামনে সালথা-ফরিদপুর সড়কের ওপর উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচ শতাধিক সমর্থক দেশীয় অস্ত্র ঢাল-কাতরা, টেঁটা, লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। একপর্যায়ে এ সংঘর্ষে আশপাশের অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ জড়িয়ে পড়েন। সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে।

দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ফলে সালথা-ফরিদপুর আঞ্চলিক সড়কে সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করে।

এ সময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। নারী ও শিশুরা এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। সংঘর্ষের সময় রফিক ও আজিজের বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৩০ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষ চলাকালে ঘটনাস্থলে একদল পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা নীরব দর্শকের ভূমিকায় একপাশে দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় সালথা-ফরিদপুর আঞ্চলিক সড়কে অন্তত ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করে।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রফিক মাতুব্বর ও গট্টি ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি আজিজ মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে দুজনেরই মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-নগরকান্দা) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘সংঘর্ষে খবর পেয়ে আমিসহ পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে আসি। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পরে সংঘর্ষে জড়িতদের বাড়িতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে বিপুলসংখ্যক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। ওই এলাকার পরিবেশ শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’