ভৈরবে ভাঙচুরের ঘটনায় ২ মামলা, আতঙ্কে বিএনপির নেতা-কর্মীরা

ভৈরব থানা ভবনপ্রথম আলো

গত শুক্রবার কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের হামলায় থানা ভবন, পুলিশ বক্স, ট্রেন, গাড়ি ও ইউএনও কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুটি মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২২ জনকে।

থানা ভবন ঘেরাও ও ভাঙচুরের অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। ওই মামলায় এজাহারভুক্ত আসামির সংখ্যা ১৯২ ও অজ্ঞাত আসামি ৭০০। অপর মামলাটি হয় ভৈরব রেলওয়ে থানায়। ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে বিরতিহীন চলা আন্তনগর সোনার বাংলা ট্রেনে ভাঙচুর চালানোর ঘটনায় স্টেশনমাস্টার মো. ইউসুফ বাদী হয়ে মামলাটি করেন। তবে এ মামলায় কারও নাম উল্লেখ না করে ১৫ থেকে ২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, থানা ভাঙচুরের মামলার আসামিদের বেশির ভাগ বিএনপির নেতা-কর্মী। প্রধান আসামি উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম। এ ছাড়া সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি মো. শাহিন, সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলামকে ওই মামলার আসামি করা হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, মূলত বিএনপির নেতাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণে শুক্রবার কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে তাণ্ডব চালায় হামলাকারীরা। ঘটনার দিন হামলাকারীরা দফায় দফায় থানা ঘেরাও ও ভাঙচুর চালায়। নাশকতাকারীদের হামলায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, ঘটনার পর থেকে স্থানীয় বিএনপির নেতাদের ধারণা ছিল দোষ না করলেও এই সহিংসতার দায়ভার তাঁদের নিতে হবে। মামলার আসামি হওয়া থেকে নিজেদের রক্ষার সুযোগ নেই, হয়েছেও তা–ই। পুলিশ এখন হামলাকারীদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বিএনপি দমনে নেমেছে। প্রতিদিন বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাসায় হানা দিচ্ছে পুলিশ। আন্দোলনকারীরা এখন অনেকটা নিজেদের নিরাপদ ভাবছে। গ্রেপ্তার নিয়েও ভয় নেই। আতঙ্ক কেবল বিএনপির ঘরে ঘরে। এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে বেশির ভাগই বিএনপির নেতা-কর্মী।
মুঠোফোনে কথা হয় উপজেলা বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সরকার কোটা আন্দোলনকে এখন বিএনপি দমনের হাতিয়ার হিসেবে নিয়েছে। আর এই কারণে কোনো কিছু না করেও আসামি হতে হলো। আজ আমার বাসায় পুলিশ গিয়ে তল্লাশি চালিয়েছে।’

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, মামলা আরও হবে। থানা ভবন ভাঙচুরের ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২০ জনকে।
রেলস্টেশন সূত্র জানায়, শুক্রবার দুপুরের দিকে হামলাকারীদের একটি অংশ হামলা চালায় রেলস্টেশনে। তখন ভৈরব স্টেশনে থেমে ছিল বিরতিহীন আন্তনগর সোনার বাংলা ট্রেনটি। হামলাকারীরা ট্রেনের পেছনের দুটি বগিতে ভাঙচুর চালায়। পরে ছাত্রলীগের কর্মী ও সমর্থকেরা এসে হামলাকারীদের ধাওয়া করেন। তখন আন্দোলনকারীরা ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে। এতে ট্রেনটি বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পায়।

ভৈরব রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার মো. ইউসুফ বলেন, হামলায় ট্রেনটির পেছনের দুটি বগি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভৈরব রেলওয়ে থানার ওসি আলীম হোসেন শিকদার বলেন, ট্রেন ভাঙচুরের ঘটনায় সিসিটিভি ক্যামেরার ছবি দেখে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।