রাউজানে বিএনপির ৫ নেতা-কর্মীকে মারধর, দোকানে ও বাড়িতে হামলা
চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির পাঁচ নেতা-কর্মীকে মারধরের পর তাঁদের বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলার শিকার ব্যক্তিরা দাবি করেছেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর সমাবেশে অংশ নেওয়ায় তাঁদের ওপর হামলা করেছেন প্রতিপক্ষের লোকজন। হামলাকারীরা বিএনপির চট্টগ্রাম উত্তর জেলার আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী বলে তাঁরা অভিযোগ করেন। হামলার সময় সন্ত্রাসীরা ডেকোরেশন দোকানের সরঞ্জাম ও একটি মোটরসাইকেল ছিনতাই করে নিয়ে যায় বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন।
হামলার শিকার বিএনপির কর্মীরা হলেন শাহেদুল আলম, সালেহ আহমদ, সালামত আলী, মোরশেদ আলম ও মুহাম্মদ নুরুল আবসার। আজ শনিবার বিকেলে উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের ব্রাহ্মণহাট বাজারে এবং গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে একই ইউনিয়নের গরীবউল্লাহ পাড়া গ্রামে এসব ঘটনা ঘটে।
গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীদের ওপর হামলার জেরে গতকাল সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণহাট বাজারে গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী যুবদল নেতা আরফাত মামুনের নির্মাণ করা তোরণ ভাঙচুরের পর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার বিকেলে বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে উপস্থিত থেকে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলটির কেন্দ্রীয় পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী। ওই সমাবেশে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। যোগ দেন ব্রাহ্মণহাট ও গরীবউল্লাহ পাড়ারও কিছু লোকজন। এরপর শুক্রবার রাতে গরীবউল্লাহ পাড়ার মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ মানিকসহ কয়েকজন বিএনপি কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর করে প্রতিপক্ষ দলের ১০ থেকে ১২ জন সন্ত্রাসী। এরপর আজ বিকেলে ব্রাহ্মণহাট বাজারে হামলার ঘটনা ঘটে একটি ডেকোরেশন দোকানে। সেখান থেকে সরঞ্জাম ও একটি মোটরসাইকেল ছিনতাই করে নিয়ে নিয়ে দুজনকে মারধর করা হয়। এদের দুজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে।
মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ মানিক প্রথম আলোকে বলেন, তিনি গিয়াস উদ্দিন কাদেরের হাত ধরে বিএনপির রাজনীতিতে এসেছেন। গতকাল শুক্রবার উরকিরচরে গিয়াস উদ্দিন কাদেরের সমাবেশে পাড়ার কিছু লোকজন নিয়ে অংশ নেন তিনি। এ কারণে রাতে ১৫ থেকে ২০ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তাঁর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারীরা এই হামলা করেছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। হামলাকারীরা যুবদল নেতা আরফাত মামুনের বাহিনী হিসেবে পরিচিত বলেও দাবি করেন তিনি।
এদিকে হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী যুবদল নেতা আরফাত মামুন আজ শনিবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, গত শুক্রবার রাতে তাঁর কর্মী জালাল উদ্দিনকে তুলে নিয়ে যায় গিয়াস উদ্দিন কাদেরের কিছু লোক। রাতে ওই একই পক্ষের লোকজন এসে তাঁর নির্মাণ করা তোরণ ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেয়।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এসব ঘটনার কোনোটিরই অভিযোগ থানায় কেউ করেননি। খোঁজ নিয়ে তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।