তিস্তায় নৌকাডুবির ঘটনায় আরও এক শিশুর লাশ উদ্ধার

কুড়িগ্রামে তিস্তায় নৌকাডুবির ঘটনার তিন দিন পর বালুচরে মিললো শিশুর লাশ। আজ উলিপুর উপজেলার চর বজরা এলাকা থেকে তোলা
ছবি: প্রথম আলো

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নে তিস্তা নদীতে যাত্রীবাহী নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার সকালে চর বজরা এলাকা থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

উদ্ধার হওয়া লাশটি কুলছুম আক্তার (৪) নামের এক শিশুর। সে উলিপুর উপজেলার পুরাতন বজরা এলাকার কয়জাল হকের মেয়ে। নৌকাডুবির ঘটনার পর মোট দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো পাঁচজন নিখোঁজ রয়েছে। এর মধ্যে একই পরিবারের তিন সদস্য রয়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের খামার দামারহাট তিস্তা খেয়াপাড় এলাকায় এ নৌকাডুবির ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার খামার দামারহাট পশ্চিম বজরা এলাকার জয়নাল আবেদীনের পরিবার ও তাঁদের আত্মীয়স্বজন মিলে ২৬ জন পুরাতন বজরা বাজারঘাট থেকে একটি নৌকায় ওঠেন। তাঁরা তিস্তার ওপারে রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় আলীবাবা থিম পার্ক এলাকায় আত্মীয়ের বাসায় ঈদ-পরবর্তী দাওয়াত খেতে যাচ্ছিলেন। নৌকাটি ঘাট থেকে ছেড়ে দেওয়ার পর তিস্তার প্রবল স্রোতে উল্টে ডুবে যায়। এ সময় কয়েকজন সাঁতরে তীরে ওঠেন এবং কয়েকজনকে স্থানীয় বাসিন্দারা নৌকায় করে উদ্ধার করেন। পরে খবর পেয়ে উলিপুর ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উদ্ধারে নামে। তারা ১৯ জনকে জীবিত উদ্ধার ও পশ্চিম বজরা এলাকার আজিজুর রহমানের শিশুকন্যা আয়শার (২) লাশ উদ্ধার করে।

ওই নৌকাডুবির ঘটনায় এখনো কয়জাল হকের ভাগনে আনিছুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী রুপালী খাতুন এবং তাঁদের মেয়ে আইরিন আক্তার (৯), আনিছুর রহমানের ভাগনি ইরা মনি (১০) ও আজিজুর রহমানের ছেলে শামীম (৮) নিখোঁজ রয়েছে।

বজরা ইউনিয়নের বাসিন্দা ও স্থানীয় উদ্ধারকর্মী মাহমুদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় তিস্তায় নৌকাডুবির ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় ব্যক্তিরা নৌকা ভাড়া করে তিন দিন ধরে উদ্ধার অভিযান চালান। নৌকাডুবির কিছুক্ষণ পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিস আজিজুর রহমানের মেয়ে আয়শা আক্তারের লাশ উদ্ধার করে। গত বৃহস্পতিবার থেকে ডুবুরি দল তিস্তায় নৌকাডুবির স্থান ও আশপাশে অনুসন্ধান চালায়। আজ সকালে স্থানীয় লোকজন চর বজরা এলাকায় এক শিশুর লাশ দেখতে পান। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোক গিয়ে লাশ উদ্ধার করেন।

কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, তিস্তায় নৌকাডুবির ঘটনায় চার শিশুসহ মোট ছয়জন নিখোঁজ ছিল। কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিস, উলিপুর ফায়ার সার্ভিস ও রংপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নিখোঁজ ব্যক্তিদের খোঁজে তিস্তায় তিন দিন ধরে অভিযান চালাচ্ছিল। আজ সকালে তিস্তার চর বজরা এলাকায় স্থানীয় লোকজন একটি শিশুর মরদেহ দেখে ফায়ার সার্ভিসকে জানান। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা লাশটি উদ্ধার করেন। নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজন ওই উদ্ধার করা মরদেহ কুলছুম আক্তারের বলে শনাক্ত করেন। ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।