সংস্কারের প্রশ্নে ঐকমত্য হলে সংবিধান লেখাও সম্ভব: সলিমুল্লাহ খান
লেখক-অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, ‘বর্তমান সরকারের মধ্যে গড়িমসি ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই যে সংস্কার করতে হবে, আপনি তা আন্দাজও করতে পারছেন না। তাহলে আপনি দেশ চালাবেন কীভাবে? এই সংস্কার করতে হলে আমাদের কী কী করতে হবে, আগে ভোটার তালিকা হোক। তারপর সংস্কারের প্রশ্নে ঐকমত্য হলে সংবিধান লেখাও সম্ভব। নতুন সংবিধানে আগের সব ফেলে দেবো তা নয়, আমরা একটাও মৌলিক অধিকার ফেলে দেবো না।’
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জে ‘গণতান্ত্রিক বিপ্লবে জাতীয় সংবিধানের রূপরেখা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। নগরের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনের এক্সপেরিমেন্টাল হলে এই সভার আয়োজন করে ধাবমান সাহিত্য আন্দোলন।
আলোচনায় স্বাগত বক্তব্য দেন রহমান সিদ্দিক। শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমির সাধারণ সম্পাদক জোনায়েদ হোসেনের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন ধাবমান সাহিত্য আন্দোলনের সম্পাদক কাজল কানন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমির সভাপতি ধীমান সাহাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈধতার উৎস জনগণ বলে মনে করেন সলিমুল্লাহ খান। তিনি বলেন, ‘এই বৈধতা কোনো সাংবিধানিক বৈধতা নয়, জনগণকে চেয়েছে, যিনি ক্ষমতায় ছিলেন তিনি বৈধভাবে নির্বাচিত হননি; সুতরাং তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার অধিকার জনণের আছে।’
সলিমুল্লাহ খান বলেন, যদি কেউ জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে, তাঁকে উৎখাত করার শক্তি অন্তর্নিহিতভাবে জনগণ সংরক্ষণ করে। তাঁকে সরিয়ে দিলে দেশে যে শূন্যতা তৈরি হবে, সেটিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হবে। তার বৈধতা আছে, এই বৈধতা যদি সাংবিধানিক না হয়, তাহলে সেই সংবিধানটা বদলানো দরকার।
সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আমাদের দেশে যাঁরা মনে করছেন, শেখ হাসিনার স্বৈরতন্ত্রের অবসানে এখন আমরা প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বাড়িয়ে দিই, তাহলে আমাদের সংবিধানের সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। অথবা পার্লামেন্ট এক কক্ষ আছে, দুই কক্ষ করে দিই, তাতে একটি পরিবর্তন হবে, তবে সেটি মৌলিক পরিবর্তন হবে না। আমরা গণতান্ত্রিক বিপ্লবের কথা বলছি, এই কথাও বলতে পারতাম না যদি গত ৫ আগস্টের ঘটনা না ঘটত। এটা যে গণতান্ত্রিক একটা অভু৵ত্থান হয়েছে, জনগণের নিজের থেকে উদ্যোগ আসে, তাদের আশা–আকাঙ্ক্ষা, তাদের দাবিটাই সংবিধান সংস্কার বা পরিবর্তনের মূল শক্তি হয়, এটাই বিপ্লব।’