সন্দ্বীপে গৃহবধূ খুন, স্বামী পলাতক
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রাশেদা বেগম (২৫) নামের এক গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওই গৃহবধূকে রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করে। নিহত গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ, রাশেদার স্বামী এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।
রাশেদা বেগম সন্দ্বীপ উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের ছোয়াখালী ফেরিঘাট এলাকার মো. জিহাদের স্ত্রী। তবে রাশেদা উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের তালতলী বাজার এলাকায় তাঁর বাবার বাড়িতে থাকতেন। এ ঘটনার পর জিহাদের দুই স্বজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়েছে পুলিশ। তবে জিহাদ পলাতক।
নিহত গৃহবধূর পরিবারের বরাত দিয়ে রহমতপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ওমর শরীফ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিন বছর আগে রাশেদার সঙ্গে জিহাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে রাশেদার সঙ্গে জিহাদের পারিবারিক কলহ লেগে থাকত। জিহাদ রাশেদাকে মারধর করতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একপর্যায়ে রাশেদা বাবার বাড়িতে চলে আসেন। গত আড়াই বছরে উভয় পরিবার বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বৈঠক করেছে।
রাশেদার বোন শারমিন আক্তার অভিযোগ করে বলেন, গতকাল রাত নয়টার দিকে খাবার খেয়ে তাঁরা সবাই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। রাত ১২টার দিকে হঠাৎ তাঁরা রাশেদার গোঙ্গানির শব্দ শুনতে পান। তৎক্ষণাৎ পরিবারের লোকজন ছুটে গিয়ে দেখেন, রান্নাঘরের দিকে দরজা খোলা। পরে রাশেদা ঘর থেকে বেরিয়ে এলে দেখা যায়, তাঁর গলা থেকে রক্ত ঝরছে। তখন রাশেদা জানিয়েছেন, জিহাদ তাঁর গলার রগ কেটে দিয়েছেন। রাশেদার ঘরে জিহাদের ব্যবহৃত ছুরি ও জুতা পাওয়া গেছে বলে রাশেদার বোন দাবি করেন। পরে রাশেদাকে রক্তাক্ত অবস্থায় সন্দ্বীপ মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
সন্দ্বীপ মেডিকেল সেন্টারের ব্যবস্থাপক শরীফ সাইফুল্লাহ, গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় এক নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ওই নারীর গলার ডান পাশে ধারালো ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনার পর থেকে রাশেদার স্বামী জিহাদ গা ঢাকা দিয়েছেন। তাই এ বিষয়ে তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, রাশেদা হত্যাকাণ্ডে দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বামী পলাতক। এ ঘটনায় সন্দ্বীপ থানায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।