বনের জায়গা উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর অভিযানে হামলা, এসি ল্যান্ডসহ আহত ৬

বনের জমি উদ্ধার অভিযানে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি গাড়ি। আজ মঙ্গলবার গাজীপুরের শ্রীপুরের ইজ্জতপুর গ্রামেছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের শ্রীপুরে বনের জায়গায় নির্মাণ করা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও বনভূমি উদ্ধার করতে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলাকালে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন অভিযানে থাকা শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (এসি ল্যান্ড) আতাহার শাকিলসহ ছয়জন। হামলায় ভেঙেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়ির সামনের কাচ। ভাঙচুর করা হয় এক্সকাভেটর। আহত হয়েছেন এক্সকাভেটরের চালক।

আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার ইজ্জতপুর বাজারের কাছে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন শ্রীপুরের ইউএনও সজীব আহমেদ। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। এর আগে আজ সকাল থেকে উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের কাফিলাতলী ও ইজ্জতপুর গ্রামে এ অভিযান শুরু হয়ে চলে বিকেল চারটা পর্যন্ত।

হামলায় এসি ল্যান্ডের পাশাপাশি আহত অন্যরা হলেন ইউএনওর গাড়িচালক আবদুল হানিফ, স্টাফ আশিকুর রহমান, রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জ কর্মকর্তার গাড়িচালক মো. লিটন, এক্সকাভেটরের চালক মো. রাসেল ও মো. হাকিমুল্লাহ।

অভিযানসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওই এলাকার ইজ্জতপুর বাজারের পশ্চিম দিকে বনের জমিতে থাকা একটি ঘর উচ্ছেদ করতে শুরু করেন বন বিভাগের লোকজন। এ সময় উচ্ছেদে ব্যবহৃত এক্সকাভেটর লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন স্থানীয় কিছু লোক। একপর্যায়ে তাঁরা সেখানে থাকা ইওএনও ও এসি ল্যান্ডের গাড়ি ঘিরে হামলা চালান। তখন এসি ল্যান্ড আতাহার শাকিলের গায়ে কয়েকটি ইটের আঘাত লাগে। এ ছাড়া হামলায় ইউএনওর সরকারি গাড়ির সামনের কাচ ও উইন্ডশিল্ড ভেঙে গেছে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রতিরোধের মুখে হামলাকারীরা পিছু হটেন।

আরও পড়ুন

শ্রীপুরের ইউএনও সজীব আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক দুজনকে আটক করা হয়েছে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। হামলায় আহত এসি ল্যান্ড আতাহার শাকিলসহ অন্যরা এখন শারীরিকভাবে ভালো আছেন।
এর আগে সকাল থেকে সেখানে বন বিভাগের সমন্বয়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালান। এ অভিযানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), পুলিশ, বন বিভাগ, ওয়াইল্ডলাইফ সেন্টারসহ বিভিন্ন বিভাগের তিন শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এ অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন শ্রীপুরের ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সজীব আহমেদ।

বন বিভাগ জানিয়েছে, গত ৫ আগস্টের পর বনের প্রচুর জমি জবরদখল করে ঘর তৈরি করা হয়। এ অভিযানে এসব জমি ও ঘর উদ্ধার করা হচ্ছে। মঙ্গলবার অভিযান শেষ হলেও বাকি থাকা অন্য জমিগুলো বন বিভাগ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উদ্ধার করবে। দিন শেষে প্রায় সাত একর বনভূমি উদ্ধার হয়। এই বনভূমি থেকে ১১৮টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।