নন্দীগ্রামে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৮
বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রা ও সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত আটজন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নন্দীগ্রাম ফিলিং স্টেশন এলাকায় বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয় চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ৬০ থেকে ৭০টি চেয়ার ভাঙচুর ও ব্যানার–ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলা হয়।
পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করে ঘটনাস্থল থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সরিয়ে দেয়। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে বঙ্গবন্ধু চত্বরে গিয়ে শান্তি সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালনে ব্যর্থ হয়ে কৈগাড়ী মোড়ে বিক্ষোভ ও সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভা করে বিএনপি।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দাবি, একজন গুলিবিদ্ধসহ তাঁদের দুজন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে বিএনপির নেতাদের দাবি, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হামলায় তাঁদের দলের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
আহত ব্যক্তিরা হলেন আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ রানা (৪৫), ছাত্রলীগ নেতা গোলজার রহমান (২০), যুবদল নেতা আবদুল কাইয়ুম (৩২), উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি জুয়েল রানা (২৬), পৌর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নুরনবী (২৪)।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুয়ায়ী শান্তি সমাবেশ চলছিল। আওয়ামী লীগের মিছিলটি মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশে যাওয়ার পথে বিএনপির নেতা-কর্মীরা হামলা করেন। এ সময় তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। এতে একজন গুলিবিদ্ধসহ ছাত্রলীগ নেতা আহত হয়েছেন। বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাঁদের কার্যালয় চত্বরে নাশকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।
উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করার ব্যাপারে তারা থানা-পুলিশের কাছে ওয়াদাবদ্ধ ছিলেন। বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রা ও সমাবেশ করার জন্য বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী দলীয় কার্যালয় চত্বরে আসেন। এ সময় আকস্মিকভাবে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সন্ত্রাসীরা পিস্তল-লাঠিসোঁটা হাতে মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয় চত্বরে হামলা করে। এতে উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতিসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলাউদ্দিন সরকার দাবি করেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।
নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বাসস্ট্যান্ডে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ এবং নন্দীগ্রাম ফিলিং স্টেশন এলাকায় দলীয় কার্যালয় চত্বরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভার প্রস্তুতি চলছিল। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। আওয়ামী লীগের একটি মিছিল হঠাৎ বিএনপির কার্যালয় চত্বরে ঢুকলে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরিস্থিতি শান্ত করে দুই দলের নেতা-কর্মীদের ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।