জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসায় অবহেলায় এক নারী রোগীর মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ করে কর্মরত পাঁচ নার্সকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবাদে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখে কর্মবিরতি শুরু করেন নার্সরা।
পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাঞ্ছিতের ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে তিন ঘণ্টা পর নার্সরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন। আজ রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া রোগীর নাম জেসমিন আক্তার (৫০)। তিনি জামালপুর শহরের চন্দ্রা এলাকার দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী এবং জামালপুর শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নূরে আলমের শাশুড়ি।
নূরে আলম ও তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েকজন সহযোগীর বিরুদ্ধে নার্সদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নূরে আলম প্রথম আলোকে বলেন, চিকিৎসা অবহেলায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে নার্সদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়েছে। তবে তাঁদের লাঞ্ছিত করা হয়নি।
নার্সরা অভিযোগ করেন, গতকাল শনিবার বিকেলে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস সমস্যা নিয়ে হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি হন জেসমিন আক্তার। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে স্বজনেরা রাতেই রোগীকে বাড়িতে নিয়ে যান। পরে আজ সকালে রোগীর অবস্থার অবনতি হলে আবারও তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়।
মুক্তিযোদ্ধা কেবিনের একটি শয্যায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল তাঁকে। বেলা ১১টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। এরপর তাঁর স্বজনেরা দায়িত্বরত নার্সদের একটি কক্ষে আটকে রাখেন। এ সময় নূরে আলমসহ তাঁর কয়েকজন সহযোগী পাঁচজন নার্সকে লাঞ্ছিত করেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখে প্রশাসনিক কর্মকর্তার কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেন। পরে হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা আগামী মঙ্গলবার উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে তিন ঘণ্টা পর কাজে ফিরে যান নার্সরা।
আশরাফুন নাহার নামের একজন নার্স বলেন, ‘ওই রোগীর মেয়ের জামাইসহ কয়েকজন আমাদের লাঞ্ছিত করেছেন।’
জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে সহকারী পরিচালক (এডি) মুহাম্মাদ মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জামালপুরের মেয়র মহোদয়। নার্সদের লাঞ্ছিত করার ঘটনাটি জানার পর তিনি বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব নিয়েছেন। আগামী মঙ্গলবার বসা হবে—এই আশ্বাস পেয়ে নার্সরা কাজে ফিরে গেছেন। হাসপাতালে স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।