বরিশালে খায়ের আবদুল্লাহর কর্মীদের ওপর আবারও হামলা, একজন গ্রেপ্তার
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহর সমর্থক বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরের জিলা স্কুল মোড়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ের পাশে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এতে সাতজন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ছয়জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। একজন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এদিকে হামলায় আহত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা অমিত হাসান ওরফে রক্তিম বাদী হয়ে গতকাল রাতেই বরিশাল কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। এতে রিফাত হোসেন, নিলয়, সুমন সিকদার ও বাদলের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১৫–২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মামলার আসামি সুমন সিকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল রাত ১২টার দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একদল কর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে রাত দেড়টার দিকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের আশ্বাসে তাঁরা অবরোধ তুলে নেন। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মো. আয়াতুল্লাহ বলেন, ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তাঁদের গ্রেপ্তার না করা হলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব।’
হামলায় আহত অমিত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমরা আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ের পাশে জিলা স্কুল মোড়ে একটি দোকানে চা পান করছিলাম। এ সময় সুমন সিকদার, রিফাত, নিলয়সহ ২০-২২ জন তরুণ সেখানে এসে আমাদের গালাগালের একপর্যায়ে মারধর করেন। হামলাকারীরা সবাই ছাত্রলীগের নেতা–কর্মী ও বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী।’
হামলায় অমিত হাসান ছাড়াও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও আবুল খায়ের আবদুল্লাহর সমর্থক মহিদুর রহমান, রাকিব হাসান, সাইমুন ইসলাম, ইরাজ শরীফ, সিফাত খান ও মো. শাহেদ আহত হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী বলেছেন, এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একদল কর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের মহাসড়ক অবরোধ করেন। তাঁরা সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা ঘটনাস্থলে গিয়ে কথা বলে শিক্ষার্থীদের অবস্থান থেকে সরিয়ে নেন। এরপর রাত দেড়টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এর আগে রোববার সন্ধ্যায় নগরের কাউনিয়ার বাঁশবাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহর তিন কর্মীকে মারধর করে গুরুতর আহত করা হয়। তাঁদের বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের অভিযোগ, মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইস আহম্মেদসহ তাঁর সহযোগীরা রামদা, লাঠি, রড নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালান। এ ঘটনার পর রোববার মধ্যরাতে রইস আহম্মেদ ও তাঁর ৯ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে কাউনিয়া থানা–পুলিশ। এরপর গতকাল রাতে নগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি।