আদালতে দাঁড়িয়ে মিথ্যা সাক্ষ্য, শিক্ষককে কারাগারে দিলেন বিচারক
আদালতে হাজির হয়ে মিথ্যা তথ্য ও সাক্ষ্য দেওয়ার অপরাধে আবু ছিদ্দিক নামের এক শিক্ষককে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার একটি মামলার শুনানি চলার সময় চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আনোয়ারুল কবির এ নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী আবু ছালেহ।
কারাগারে থাকা কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বরইতলী উচ্চবিদ্যালয়ের বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছারকে জামিনে মুক্ত করার জন্য এ মিথ্যা সাক্ষ্য দেন আবু ছিদ্দিক। তিনি বরইতলী উচ্চবিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক।
মামলার নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের তহবিল থেকে ১ কোটি ৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর সাবেক প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছারকে বরখাস্ত করে। এ ঘটনায় তৎকালীন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শাহীন মুরাদ বাদী হয়ে চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য কক্সবাজার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) দায়িত্ব দেন। সে সময় সহকারী শিক্ষক আবু ছিদ্দিকসহ তিনজন সিআইডির কাছে নুরুল আবছারের অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি সত্য বলে সাক্ষ্য দেন। পরে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে সিআইডি। ১৮ ডিসেম্বর চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন নুরুল আবছার। মামলার শুনানি শেষে আদালত ওই দিন নুরুল আবছারকে কারাগারে পাঠান।
চকরিয়া আদালতের আইনজীবী আবু ছালেহ বলেন, গতকাল নুরুল আবছারের জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। এ সময় আদালত সিআইডির কাছে সাক্ষ্য দেওয়া সহকারী শিক্ষক আবু ছিদ্দিক ও অপর সাক্ষী মাহফুজুল করিমের কাছে তদন্তে সাক্ষ্য দেওয়ার বিষয়ে জানতে চান। মাহফুজুল করিম সিআইডির কাছে দেওয়া সাক্ষ্যের বিষয়ে স্বীকার করলেও অপর সাক্ষী আবু ছিদ্দিক সিআইডির কাছে সাক্ষ্য দেননি বলে আদালতে মিথ্যা তথ্য দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে চকরিয়া আদালতের বেঞ্চ সহকারী লুৎফুর রহমান বাদী হয়ে গতকাল দুপুরে একই আদালতে আবু ছিদ্দিকের বিরুদ্ধে একটি স্বপ্রণোদিত মামলা করেন। ওই মামলায় বিচারক আনোয়ারুল কবির আদালতে দাঁড়িয়ে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অপরাধে আবু ছিদ্দিককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে গতকাল সন্ধ্যায় আদালতের পুলিশ তাঁকে কারাগারে নিয়ে যায়।