হবিগঞ্জের ২৩টি চা–বাগানের শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেননি
৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে চা-শ্রমিকদের টানা ১০ দিন ধর্মঘটের পর মৌলভীবাজারের শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিলেও পার্শ্ববর্তী জেলা হবিগঞ্জের ২৩টি চা–বাগানের প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিক কাজে যোগ দেননি। তাঁরা বলছেন, মজুরি নির্ধারণের বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে সরকার কিংবা বাগানের মালিকপক্ষের কোনো সমঝোতা হয়নি। এ কারণে আজ তাঁরা কাজে যোগ দেননি। চা-শ্রমিকদের আন্দোলন অব্যাহত আছে।
মৌলভীবাজার জেলার আন্দোলনরত চা-শ্রমিকেরা বর্তমান মজুরি ১২০ টাকাতেই আজ সোমবার থেকে কাজে ফিরেছেন। গতকাল রোববার গভীর রাতে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রশাসন ও বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের মধ্যে আলোচনা শেষে কাজে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন জেলার চা-শ্রমিকেরা।
হবিগঞ্জের ২৩টি চা-বাগান নিয়ে গঠিত লস্করপর ভ্যালির সভাপতি রবীন্দ্র গের আজ দুপুর ১২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মৌলভীবাজারে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এর সঙ্গে আমাদের কোনো সমঝোতা হয়নি। সাধারণ শ্রমিকেরা ১২০ টাকা মজুরিতে কাজে যোগ দেবেন না। তাই আমরা আজ কাজে যোগ দিইনি।’
মৌলভীবাজারে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এর সঙ্গে আমাদের কোনো সমঝোতা হয়নি। সাধারণ শ্রমিকেরা ১২০ টাকা মজুরিতে কাজে যোগ দেবেন না। তাই আমরা আজ কাজে যোগ দিইনি।
আজ বেলা ১১টার দিকে হবিগঞ্জের চা-বাগানগুলোর শ্রমিকেরা কাজে যোগদান না করে চুনারুঘাট উপজেলার চানপুর চা–বাগানের মাঠে জড়ো হন। সেখানে সমাবেশ করে বক্তব্য দেন শ্রমিকেরা। তাঁরা বলেন, শ্রমিকদের সঙ্গে কারও সমঝোতা হয়নি। তাঁরা কেন কাজে যাবেন? ১২০ টাকা মজুরিতে কাজে যাবেন না তাঁরা।
শ্রমিকদের কাজে না ফেরার খবরে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসনের পক্ষে ঘটনাস্থলে যান চুনারুঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিদ্ধার্থ ভৌমিক। তিনি শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁদের মজুরি নিয়ে ভাবছেন। তাই আন্দোলন না করে তাঁদের কাজে যোগদানের অনুরোধ করেন ইউএনও। বেলা একটা পর্যন্ত শ্রমিকেরা তাঁদের অবস্থানে অনড় ছিলেন।
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, মৌলভীবাজারের সিদ্ধান্ত হবিগঞ্জের সাধারণ শ্রমিকেরা মেনে নিচ্ছেন না। তাই লস্করপুর ভ্যালির নেতারা শ্রমিকদের নিয়ে চুনারুঘাট উপজেলার চানপুর চা–বাগানে বৈঠকে বসেছেন।