গাজীপুরে আবারও মহাসড়ক অবরোধ করলেন শ্রমিকেরা, মানুষের ভোগান্তি

গাজীপুর সদর উপজেলার জয়দেবপুরের ভবানীপুর এলাকায় আর অ্যান্ড জি বিডি গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা আজ সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও চালকেরাছবি: প্রথম আলো

গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুরে অবস্থিত একটি কারখানার সামনে আজ সোমবারও বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকেরা। আজ সকাল নয়টার দিকে আর অ্যান্ড জি বিডি লিমিটেড নামে ওই কারখানার শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। ঘণ্টাখানেক তাঁরা মহাসড়ক আটকে রাখলে উভয় পাশে পাঁচ থেকে ছয় কিলোমিটার সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। এতে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েন যানবাহনের যাত্রী ও চালকেরা।

কয়েক দিন ধরে শ্রমিক আন্দোলনের কারণে গাজীপুরের চারটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। সেগুলো আজও খোলার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এই চারটিসহ জেলায় মোট নয়টি কারখানা বন্ধ আছে। এ ছাড়া জেলার অধিকাংশ কারখানাতেই আজ উৎপাদন স্বাভাবিক আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আরও পড়ুন

গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম দুপুর পৌনে ১২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, গাজীপুর জেলায় আজ নয়টি কারখানা বন্ধ আছে। এর মধ্যে চারটি কারখানা শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া একটি কারখানা লে-অফ, একটি অস্থায়ী বন্ধ এবং তিনটি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

কারখানার শ্রমিক ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সদর উপজেলার ভবানীপুর এলাকার আর অ্যান্ড জি বিডি লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা গতকাল দুপুরের পর হাজিরা বোনাস, নাইট বিল ও টিফিন বিল বৃদ্ধি, প্রশাসন বিভাগের ব্যবস্থাপকের অপসারণসহ ১২ দফা দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। ওই ঘটনার পর শিল্প পুলিশ, থানা-পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা শ্রমিক ও কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন। পরে বিকেল পাঁচটার পর শ্রমিকেরা বাড়ি ফিরে যান। ওই ঘটনার পর কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই দিনের (সোম ও মঙ্গলবার) জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে। অনেক শ্রমিক ওই ঘোষণা না জানায় আজ সকালে কারখানায় এসে ছুটির নোটিশ দেখে উত্তেজিত হয়ে যান এবং বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে শ্রমিকেরা কারখানার পাশে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেন। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ ও থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিলে সকাল ১০টার দিকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে এর আগেই কয়েক কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়।

শিল্প পুলিশ জানায়, বন্ধ থাকা কারখানাগুলো ছাড়া অন্যান্য কারখানায় স্বাভাবিক উৎপাদনপ্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। শ্রমিকেরা সকাল থেকেই কাজে যোগ দিয়েছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিল্প পুলিশের পাশাপাশি সেনাসদস্যরাও প্রস্তুত আছেন।

জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হালিম বলেন, সকালে শ্রমিকেরা বেশ কিছু সময় অবরোধ সৃষ্টি করেন। পরে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়া হলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।