কালকিনিতে জমিজমার বিরোধে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ব্যবসায়ী নিহত, আহত ৬
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে সাজ্জাদ হাওলাদার (২৮) নামের এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার কয়ারিয়া ইউনিয়নের চর আলিমাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে নারীসহ উভয় পক্ষের আরও ছয়জন আহত হয়েছেন।
নিহত সাজ্জাদ হাওলাদার চর আলিমাবাদ এলাকার কালু হাওলাদের ছেলে। পেশায় তিনি স্যানিটারি ব্যবসায়ী ছিলেন। আহত ব্যক্তিরা হলেন একই এলাকার আসাদ হাওলাদার (৩৬), মনির হাওলাদার (৪৪), খলিল হাওলাদার (২৫), জাহানারা বেগম (৬০), কালু হাওলাদার (৫২) ও স্বপন হাওলাদার (৬০)। তাঁদের বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ, নিহত ব্যক্তির পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চর আলিমাবাদ এলাকার কালু হাওলাদারের সঙ্গে একই এলাকার হারুন হাওলাদারের দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে এলাকায় কয়েক দফা সালিসও হয়েছে। এরপরও জমি দখল নিয়ে গতকাল বুধবার বিকেলে ও আজ সকালে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আজ সকালে হারুন হাওলাদার লোকজন নিয়ে কালু হাওলাদার ও তাঁর ছেলে সাজ্জাদের ওপর হামলা করেন। এরপর দেশি অস্ত্র নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে উভয় পক্ষের অন্তত সাতজন আহত হন। গুরুতর আহত সাজ্জাদকে উদ্ধার করে শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১২টার দিকে তিনি মারা যান।
হামলায় আহত হয়েছেন নিহত সাজ্জাদের বাবা কালু হাওলাদার। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি প্রথম আলোকে বলেন, হারুন হাওলাদার লোকজন নিয়ে তাঁদের জমি দখল করতে আসেন। বাধা দিলে তাঁরা দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা করেন। এ সময় তাঁরা তাঁর ছেলেকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর ছেলের মৃত্যু হয়। তিনি ছেলের হত্যায় জড়িত সবার বিচার দাবি করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে হারুন হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের ওপর তারা প্রথমে হামলা চালান। আমরা প্রতিরোধ করেছি মাত্র। আমরা কারও কোনো জমি দখল করতে যাইনি। আমাদের বিপদে ফেলতে তাঁরা মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন।’
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও কালকিনি সার্কেল) আলাউল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, জমিজমা নিয়ে গতকাল দুই পক্ষের মধ্যে একদফা মারামারি হয়। পরে আজ সকালে আবার মারামারি হয়। একপর্যায়ে সাজ্জাদ নামের এক ব্যক্তির মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ঘটনাস্থল বরিশালের সীমান্তবর্তী এলাকায়। আহত ব্যক্তিরা বরিশাল মেডিকেলসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পুলিশ সকাল থেকেই ঘটনাস্থলে আছে। এলাকায় হামলাকারী ব্যক্তিরা কেউ নেই। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত।