উড়োজাহাজের আসনের নিচে ও শৌচাগারে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল ৩৪ কেজি সোনা
সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুবাই থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট থেকে প্রায় ৩৪ কেজি সোনার চালান আটক করা হয়েছে। বার ও বল আকারে থাকা এসব সোনা ছড়িয়ে–ছিটিয়ে উড়োজাহাজের যাত্রীদের আসনের নিচে এবং শৌচাগারের বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে রাখা ছিল। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ এ সোনার চালান আটক করে।
আজ শুক্রবার সকাল ৮টা ৫৩ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের বিজি-২৪৮ নম্বর ফ্লাইট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করলে সোনার চালানটি আটক করা হয়। এ সময় প্রাথমিকভাবে জড়িত সন্দেহে নয়জনকে আটক করা হলেও পরবর্তীকালে জিজ্ঞাসাবাদের পর পাঁচজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর চারজনকে আটক দেখানো হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার বড়ধামাই এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান (৩৮), সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কামালবাজারের মো. সানু মিয়া (৩৫), হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের মো. আক্তারুজ্জামান (৪০) ও একই উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের মিসফা মিয়া (৪৯)।
সোনার চোরাচালান উদ্ধারের ঘটনায় সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি।
আজ দুপুর ১২টার দিকে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গিয়ে জানা যায়, দুবাই থেকে আসা ফ্লাইটটিতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালায় বিমানবন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এ সময় বিমানের যাত্রীরা নিজ নিজ আসনে বসা ছিলেন। উড়োজাহাজে তল্লাশি করে কয়েকটি আসনের নিচ থেকে স্কচটেপ প্যাঁচানো অবস্থায় সোনার বার উদ্ধার করা হয়। পরে বিমানের শৌচাগার তল্লাশি করে লুকিয়ে রাখা আরও সোনার ‘ডিম’ উদ্ধার করা হয়। সব মিলিয়ে ২৮০ সোনার বার ও ৬টি ডিম আকারের সোনার বল জব্দ করা হয়। সোনার বারগুলোর ওজন ৩২ কেজি ৬৪৮ গ্রাম এবং বলগুলোর ওজন দেড় কেজির বেশি।
সোনার বারগুলো উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে চাননি সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কাস্টমসের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদুল করিম। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে। আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সিলেট বিমানবন্দর থানায় মামলা করা হবে।
ওসমানী বিমানবন্দর কাস্টমসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সোনার চালান পাচারের খবর কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে গেছে এমন তথ্য পেয়ে চোরাচালানকারীরা সেগুলো ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রেখে থাকতে পারেন। পাচারকারীরা সোনা গলিয়ে বল বানিয়েও নিয়ে এসেছিলেন। সেগুলো বিমানের শৌচাগারে রাখা ছিল। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। তিনি আরও বলেন, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে এক যাত্রী এক সপ্তাহ আগেও সিলেটে এসেছিলেন। এ ছাড়া ওই যাত্রীর মাসে কয়েকবার দুবাই যাতায়াতের তথ্য আছে।
এদিকে কাস্টমস গোয়েন্দা বিভাগের পাঠানো খুদে বার্তায় জানানো হয়, সিলেট বিমানবন্দরে চার যাত্রীর কাছ থেকে এবং উড়োজাহাজের টয়লেট থেকে ৩২ কেজি ৬৫ গ্রাম সোনা (২৮০টি বার) এবং ৬টি ডিম (লিকুইড গোল্ড ১.৫ কেজি ) জব্দ করা হয়েছে।