সাংবাদিক রব্বানি হত্যা মামলার প্রধান আসামি মাহমুদুলের আরেক সহযোগী গ্রেপ্তার

সাংবাদিক গোলাম রব্বানি হত্যার ঘটনায় বরখাস্ত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলমের আরেক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার বিকেলে বকশীগঞ্জ থানা প্রাঙ্গণে
ছবি: প্রথম আলো

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় সাংবাদিক গোলাম রব্বানি হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাময়িক বরখাস্ত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম ওরফে বাবুর আরেক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার আসলাম মিয়া (৩৫) বকশীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব কামালের বার্ত্তী এলাকার বাসিন্দা। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। সীমান্ত দিয়ে তিনি ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, রিমান্ডে থাকা অবস্থায় আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে আসলামের নাম পাওয়া যায়। কিন্তু ঘটনার পর থেকে আসলাম সীমান্ত এলাকায় পালিয়ে ছিলেন। প্রথমে তিনি বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি সীমান্ত এলাকায় অবস্থান নেন, যাতে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যেতে পারেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তাঁকে বকশীগঞ্জ থানায় আনা হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জামালপুর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরমান আলী বলেন, গ্রেপ্তার আসলাম মিয়াকে কাল বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হবে।

থানা-পুলিশ সূত্র জানায়, সাংবাদিক রব্বানির ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হওয়ার আগেই ১৩ জনকে আটক করা হয়। ১৭ জুন সকালে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থেকে প্রধান আসামি মাহমুদুল আলমকে আটক করে র‍্যাব। মামলার পর তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ১৮ জুন আদালত তাঁদের সবাইকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে পাঠান। ২২ জুন রিমান্ড শেষে আসামিদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে রেজাউল করিম ও মো. মনিরুজ্জামান ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন। এক দিন পর রিমান্ড শেষে হত্যার দায় স্বীকার করে প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন। আসলামসহ আলোচিত হত্যা মামলাটিতে এ নিয়ে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

১৪ জুন রাত ১০টার দিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়িতে ফিরছিলেন সাংবাদিক গোলাম রব্বানি। তখন বকশীগঞ্জের পাটহাটি এলাকায় সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান (বরখাস্ত) মাহমুদুল আলমের নেতৃত্বে তাঁর ওপর হামলা করে একদল সন্ত্রাসী। এ সময় তাঁকে টেনেহিঁচড়ে উপর্যুপরি কিলঘুষি ও বেদম মারধর করা হয়। একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা তাঁকে ফেলে পালিয়ে যায়। পরদিন দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

গোলাম রব্বানি অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমের জেলা প্রতিনিধি এবং একাত্তর টিভির বকশীগঞ্জ উপজেলার সংবাদ সংগ্রাহক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রব্বানির স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার এজাহারে মাহমুদুল আলম, তাঁর ছেলে রিফাতসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে।