মানিকগঞ্জে গুলি ছুড়ে সোনা ও টাকা লুট, এক ‘ডাকাত’ আটক
মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায় গুলি ছুড়ে ও ককটেল ফাটিয়ে ডাকাতেরা এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় ডাকাতদের ছোড়া গুলিতে এক ব্যক্তি আহত হন। গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলা সদরের দৌলতপুর পূর্বপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ধাওয়া দিয়ে ডাকাত দলের এক সদস্যকে আটক করে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। গুলিবিদ্ধ জাকির হোসেন (৩৫) ও আহত ডাকাত সদস্য মো. জসিম উদ্দিনকে (৩৬) জেলা সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আটক ডাকাত সদস্য জসিম গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানিকদী গ্রামের আবুল শেখের ছেলে। গুলিবিদ্ধ জাকির টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার গাংবিহালী গ্রামের মফিজ মৃধার ছেলে।
জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা (ডিএসবি), সাটুরিয়া থানা-পুলিশ এবং স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলা বাজারে জননী জুয়েলার্স নামের একটি স্বর্ণালংকারের দোকান আছে দিলীপ ওরফে দিলু রাজবংশীর। গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে দোকান বন্ধ করে একটি ব্যাগের ভেতর প্রায় ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার এবং ১ লাখ টাকা নিয়ে মোটরসাইকেলে করে পাশের দৌলতপুর পূর্বপাড়ার বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। দৌলতপুর থানা থেকে ২৫০ থেকে ৩০০ গজ দূরে দৌলতপুর পূর্বপাড়া কালীমন্দিরের কাছে যাওয়ার পরপরই দু-তিনটি মোটরসাইকেলে করে পাঁচ থেকে ছয়জন ডাকাত সদস্য দৌলতপুর-নাগরপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। এর পর দিলীপের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে তাঁর কাছে থাকা ব্যাগভর্তি স্বর্ণালংকার ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে ডাকাত সদস্যরা। এ সময় সেখানে উপস্থিত জাকির হোসেন এতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে এক ডাকাত সদস্য পিস্তল দিয়ে তাঁর পায়ে গুলি করে স্বর্ণালংকার ও টাকা নিয়ে যান।
এ ঘটনার খবর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় লোকজন রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার কলিয়া ইউনিয়নের টেপড়ি এলাকায় একটি মোটরসাইকেল রেখে কয়েকজন ডাকাত পালিয়ে যান। এ ছাড়া একই ইউনিয়নের গাজীশাইল গ্রামে মোটরসাইকেলসহ ডাকাত সদস্য জসিমকে আটক করে এলাকাবাসী। এর পর তাঁকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন তাঁরা।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম মোল্লা আজ শনিবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশে সোপর্দ করা গণপিটুনির শিকার ব্যক্তিকে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত ভুক্তভোগী থানায় লিখিত অভিযোগ দেননি। তাঁর দেওয়া অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ডাকাতি কিংবা ছিনতাই করে স্বর্ণালংকার ও অর্থ লুটের মামলা হবে। তবে ঘটনার তদন্ত ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।