বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচটি জেলা নিয়ে পদ্মা নামের বিভাগ ঘোষণা করা হলেই আনন্দমিছিল, সমাবেশ ও মিষ্টি বিতরণ করবেন—এমন প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ জন্য আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে শহরের হাসিবুল হাসান লাবলু সড়কের শেখ রাসেল স্কয়ারে সমবেত হয়েছিলেন তাঁরা।
কিন্তু দুপুরে খবর আসে, পদ্মা ও মেঘনা নামের দুটি বিভাগ করার সিদ্ধান্ত থেকে আপাতত সরে এসেছে সরকার। এরপর আনন্দমিছিল না করেই বাড়ি ফিরে যান জেলা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
আনন্দমিছিলে অংশ নিতে উপস্থিত হয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক, ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোস, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ঝর্ণা হাসান প্রমুখ।
জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিভাগ ঘোষণা করা হলেই সঙ্গে সঙ্গে আনন্দমিছিল করবেন—এ প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন নেতা-কর্মীরা। কিন্তু বেলা দুইটার দিকে ঢাকা থেকে খবর আসে, প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস-সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) সভায় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের এ সময়ে আপাতত নতুন দুটি বিভাগ ঘোষণা না করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে বলা হয়, এটি এখন আগ্রাধিকারমূলক বিষয় নয়। এখন একেকটি বিভাগ করতে গেলে এক হাজার কোটি টাকা বেশির খরচ হবে। তাই এটি স্থগিত রাখা হয়েছে।
এ খবর শোনার পর বদলে যায় উৎসবমুখর রাসেল স্কয়ারের পরিস্থিতি। একপর্যায়ে জেলা আওয়ামী লীগের হতাশ নেতা-কর্মীরা একে একে রাসেল স্কয়ার ত্যাগ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের এক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, ‘চার বছর ধরে আমরা অপেক্ষায় আছি ফরিদপুর বিভাগ হবে। বর্তমান সরকারের সময় রংপুর ও ময়মনসিংহের মতো পুরোনো জেলাগুলো বিভাগ করা হলো। কিন্তু আমরা যে তিমিরে ছিলাম, সেখানেই রয়ে গেলাম। এখন বলা হচ্ছে, ফরিদপুর নামে বিভাগ দেওয়া হবে না। দেওয়া হবে নদীর নামে। এটা নিয়েও আমরা একেক সময় একেক সিদ্ধান্ত নিতে দেখেছি।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিভাগ ঘোষণা করা হবে—এ প্রত্যাশায় আনন্দমিছিল, সমাবেশ ও মিষ্টি বিতরণ করার প্রস্তুতি ছিল। আমার রাসেল স্কয়ারে বেলা দুইটা পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু বিভাগ ঘোষণা স্থগিত করা হলো। এর মানে হচ্ছে পুরো বিষয় ঝুলে গেল।’