গাজীপুরে দুই ভোটকেন্দ্রসহ তিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুর্বৃত্তদের আগুন
গাজীপুর মহানগর ও কালিয়াকৈর উপজেলার তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে মহানগরীর পূর্ব চান্দনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কালিয়াকৈর উপজেলার বাঁশতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভোটকেন্দ্র হিসেবে নির্ধারিত। আগুনে পুড়ে যাওয়া টিএনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত সিটি নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ছিল। তবে এবার সেটি ভোটকেন্দ্রের তালিকায় রাখা হয়নি।
গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতের কোনো এক সময়ে এসব অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। আগুনে চান্দনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকটি কক্ষ ও টিএনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯টি কক্ষ এবং বাঁশতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষ পুড়ে গেছে।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১৭নং ওয়ার্ডে অবস্থিত পূর্ব চান্দনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে ভোটকেন্দ্রের কয়েকটি কক্ষ পুড়ে গেছে। অপর দিকে রাত সাড়ে ৩টার দিকে ১৮নং ওয়ার্ডে অবস্থিত টিএনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে জয়দেবপুর ফায়ার সার্ভিস ও গাজীপুর মর্ডান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন। ততক্ষণে স্কুলের নয়টি কক্ষ পুড়ে যায়।
টিএনটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ওসমান আলী বলেন, রাত ৩টার দিকে স্কুল থেকে নৈশপ্রহরী ফোন দিয়ে স্কুলে আগুন লাগার কথা জানান। তাৎক্ষণিক তিনি ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেন। খবর পেয়ে জয়দেবপুর ফায়ার সার্ভিস ও গাজীপুর মর্ডান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন। ততক্ষণে স্কুলের নয়টি কক্ষ পুড়ে যায়। বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্র ছিল না।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সিদ্দিক বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আগুনে পূর্ব চান্দনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্রের আংশিক পুড়ে যায় এবং টিএনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নয়টি কক্ষ পুড়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় টিএনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্র ছিল। এবার বিদ্যালয়টিতে ভোটকেন্দ্র রাখা হয়নি।
অপর দিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ইউনিয়নের বাঁশতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা গিয়ে দেখেন অফিসকক্ষ পুড়ে গেছে। এ ছাড়া অফিসকক্ষে থাকা প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র ও অল্প কিছু নতুন বইও পুড়ে গেছে। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানা–পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
বিদ্যালয়ের সভাপতি আলতাফ হোসেন বলেন, অফিসকক্ষে অনেক মূল্যবান কাগজপত্র ছিল। কিছু ছাত্র অনুপস্থিত থাকায় তাদের নতুন বইও অফিসকক্ষে রাখা ছিল। সব কটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
কালিয়াকৈর থানার ওসি এ এফ এম নাসিম বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে সকালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ১৮ নম্বর ওয়ার্ড ও কালিয়াকৈর উপজেলা নিয়ে গঠিত গাজীপুর-১ আসন। এবারের নির্বাচনে এখানে মোট সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের আ ক ম মোজাম্মেল হক (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম (ট্রাক), বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের মো. সফিকুল ইসলাম (ফুলের মালা), জাতীয় পার্টির এম এম নিয়াজ উদ্দিন (লাঙ্গল), বিএনএমের মো. আর্শেদুজ্জামান (নোঙ্গর), ইসলামী ঐক্যজোটের ফজলুর রহমান (মিনার), তৃণমূল বিএনপির চৌধুরী ইরাদ আহ্মদ সিদ্দিকী (সোনালী আঁশ)। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির নিয়াজ উদ্দিন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।