ভূরুঙ্গামারীতে এসএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ইউএনওকে শোকজ
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় এসএসসির পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপক কুমার দেব শর্মাকে কারণ দর্শাও (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার বিষয়টি জানা যায়। গত বুধবার করা শোকজে তিন কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বিধি মোতাবেক ইউএনও পরীক্ষার ব্যাপারে চিঠি ইস্যু করেছেন। তারপরও কোনো গাফিলতি আছে কি না, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই ঘটনায় ইউএনওর কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে। জবাব পেলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
এ বিষয়ে জানার জন্য ইউএনও দীপক কুমার দেব শর্মার মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ভূরুঙ্গামারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রহমানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ হোসেনকে ভূরুঙ্গামারীতে বদলি করা হয়েছে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুল আলম বলেন, বরখাস্ত হওয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রহমান অসুস্থ হয়ে বৃহস্পতিবার ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তাঁর উচ্চ রক্তচাপসহ নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি তদন্তকাজ শেষে আজ ফিরে গেছে।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীন চলতি এসএসসি পরীক্ষায় ছয়টি বিষয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। অভিযোগ আছে, এই অপকর্মের নেতৃত্বে ছিলেন একজন কেন্দ্রসচিব, যিনি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ঘটনাটি গত মঙ্গলবার ধরা পড়ে। এরপর গত বুধবার চারটি বিষয়—গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, কৃষিশিক্ষা ও রসায়নের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। ইতিমধ্যে এসব পরীক্ষার নতুন তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি দুই বিষয় উচ্চতর গণিত ও জীববিদ্যার পরীক্ষা নতুন প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে নির্ধারিত সময়েই নেওয়া হবে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাতে ভূরুঙ্গামারী থানায় একটি মামলা হয়। মামলায় উপজেলার নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্রের সচিব মো. লুৎফর রহমান, সহকারী শিক্ষক মো. জোবাইর হোসেন ও মো. আমিনুর রহমান, বিদ্যালয়টির অফিস সহকারী মো. আবু হানিফসহ অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে কেন্দ্রসচিব লুৎফর রহমান এবং শিক্ষক জোবাইর হোসেন ও আমিনুরকে। এরপর নতুন করে আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।