ভোরটা ছিল কুয়াশার চাদরে মোড়া। কয়েক গজ দূরের বস্তুও দেখা যাচ্ছিল না। তবে এরই মধ্যে দূরদূরান্ত থেকে দীপ্ত প্রত্যয়ে গণিতপ্রেমী শিক্ষার্থীরা সমবেত হয়েছে ফরিদপুরের সারদা সুন্দরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। এখানেই আজ শুক্রবার উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ডাচ্–বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো ফরিদপুর আঞ্চলিক গণিত উৎসব।
আজ সকাল ৯টায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে জাতীয়, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড ও আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ অসীম কুমার সাহা, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন সারদা সুন্দরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলাম ও আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ফরিদপুর শাখা ব্যবস্থাপক মো. জামাল আবু নাসের।
উৎসব আয়োজন করছে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি, পৃষ্ঠপোষকতায় ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ও ব্যবস্থাপনায় প্রথম আলো। আয়োজনে সহযোগিতা করে প্রথম আলো বন্ধুসভা।
অধ্যক্ষ অসীম কুমার সাহা বলেন, ‘বর্তমান যুগ গণিতের যুগ। ভাষা ছাড়া যেমন কোনো জাতি চলতে পারে না, তেমনই গণিত ছাড়া আমরা অচল। এ কারণে গণিতকে বলা হয় ল্যাঙ্গুয়েজ অব সায়েন্স। তাই গণিতকে জয় করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
মো. জামাল আবু নাসের বলেন, ‘আমাদের নিজেদের প্রয়োজনে গণিত শিখতে হবে, গণিতের চর্চা করতে হবে। একজন সুনাগরিক হতে হলে গণিতের কোনো বিকল্প নেই।’
‘আমরা আমাদের জীবনে যত বেশি গণিতের চর্চা করব, আমরা তত উন্নত হব’—এমন মন্তব্য করেছেন সারদা সুন্দরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলাম। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতে বাংলাদেশের নেতৃত্ব তোমাদের দিতে হবে। এ জন্য তোমাদের নিয়মিত গণিত চর্চা করে যোগ্য থেকে যোগ্যতর হয়ে উঠতে হবে।’
ফরিদপুরে আঞ্চলিক এ গণিত উৎসবে অংশ নিতে শরীয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী ও ফরিদপুরের ৩৩২ জন নিবন্ধন করেছে। এর মধ্যে প্রাইমারি ক্যাটাগরিতে ৮২, জুনিয়র ১১৯, সেকেন্ডারি ৭৬ ও হায়ার সেকেন্ডারি ক্যাটাগরিতে ৫৫ জন রয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর শুরু হয় পরীক্ষা। এক ঘণ্টার পরীক্ষা শেষে খাতা মূল্যায়নের পাশাপাশি চলবে প্রশ্নোত্তর পর্ব। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ফরিদপুর আঞ্চলিক গণিত উৎসব থেকে ২৪ জনকে ঢাকা যাওয়ার জন্য নির্বাচন করা হবে। উৎসবকে সফল করতে ফরিদপুর বন্ধুসভার সদস্য মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, অজয় দাস, জাহিদুজ্জামান খান, তাওহীদুজ্জামান খান, সাজু আহম্মেদ, শ্যামল মণ্ডল, মানিক কুন্ডু, সুব্রত পাল, শুভ বিশ্বাস, মিঠুন দাস, রিফাত হাসনাত, সজীব দত্ত, মোহাম্মদ জাকির হোসেন, লক্ষ্মণ মণ্ডল, কথা পাল, তৃষা দাস, মেঘলা দত্ত, জহির হোসেন, রিমা আক্তার, মাফিকুল ইসলাম, সোহাগ দত্তসহ আরও অনেকে কাজ করে যাচ্ছেন।