ময়মনসিংহে সাংবাদিক স্বপন ভদ্র হত্যার দায় স্বীকার করে গ্রেপ্তার তরুণের জবানবন্দি
ময়মনসিংহে সাংবাদিক স্বপন কুমার ভদ্র (৭০) হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন গ্রেপ্তার তরুণ সাগর মিয়া। শনিবার রাত আটটার দিকে ময়মনসিংহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদাত হোসেন তাঁর জবানবন্দী গ্রহণ করেন।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে পূর্ববিরোধের জের ধরে সাগর মিয়া একাই সাংবাদিক স্বপন ভদ্রকে হত্যা করেন বলে আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে উল্লেখ করেছেন। শনিবার সন্ধ্যার পর আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার পর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
সাংবাদিক স্বপন ভদ্র হত্যার ঘটনায় তাঁর স্ত্রী সবিতা ভদ্র বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় শনিবার সন্ধ্যায় একটি মামলা করেন। মামলায় সাগর মিয়ার নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাত পরিচয় আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে সাগরকে শনিবার সন্ধ্যায় আদালতে সোপর্দ করা হয়। সাগর তখন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
শনিবার বেলা ১১টার দিকে ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় শম্ভুগঞ্জের রঘুরাম টানপাড়া এলাকায় নিজ বাসার সামনে সাংবাদিক স্বপন কুমার ভদ্রকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তিনি তারাকান্দা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি ছিলেন। আগে ময়মনসিংহ থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্বজন পত্রিকার তারাকান্দা উপজেলা প্রতিনিধি ছিলেন। বর্তমানে তিনি কোনো গণমাধ্যমে কর্মরত ছিলেন না। তবে এলাকার বিভিন্ন ঘটনা ও বিষয় নিয়ে ফেসবুকে নিয়মিত লেখালেখি করতেন।
এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে গৌরীপুর উপজেলার সহনাটী ইউনিয়নের পাছার গ্রাম থেকে সাগর মিয়াকে (১৮) আটক করে পুলিশ। তিনি ওই গ্রামের বাসিন্দা। তবে শম্ভুগঞ্জের টানপাড়া এলাকায় নানাবাড়িতে থাকতেন।
সাংবাদিক স্বপন কুমার ভদ্রকে হত্যার ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় কোতোয়ালি থানায় সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার (এসপি) আজিজুল ইসলাম জানান, সাংবাদিক স্বপন কুমার ভদ্র কর্মরত থাকা অবস্থায় শম্ভুগঞ্জের রঘুরামপুর এলাকার মাদকের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে পত্রিকায় লেখালেখি করেন। এতে আসামি সাগর ক্ষুব্ধ হন। বছরখানেক আগেও স্বপন ভদ্রকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করেন। আসামি সাগর নিজে স্বভাবগত মাদকসেবী ও খুচরা মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত। পূর্বশত্রুতার জের ধরে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি স্বীকার করেছেন। হত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে।