রায়পুরায় ৬ জন নিহতের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন

চরাঞ্চলে আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ নরসিংদীর রায়পুরার বালুরচর গ্রামে মানববন্ধন হয়েছেছবি: প্রথম আলো

নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নারী, কিশোরসহ ছয়জন নিহতের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে।

আজ শনিবার দুপুরে উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের বালুরচর গ্রামে এই মানববন্ধন করেন নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যসহ স্থানীয় দুই শতাধিক ব্যক্তি। মানববন্ধন থেকে দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তাঁরা।

২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের বালুরচর এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ছয়জন নিহত ও অন্তত ৫০ জন আহত হন। নিহত ছয়জন হলেন মৃত মো. ইসমাইল ব্যাপারীর ছেলে আমির হোসেন (৬০) ও বাদল মিয়া (৪৫), শাহীন মিয়ার ছেলে জুনাইদ মিয়া (১৬), মো. আব্বাস আলীর ছেলে আনিস মিয়া (৩০), আসাবুদ্দিনের ছেলে সিদ্দিক মিয়া (২৮) ও সাহাব উদ্দিনের স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৪০)।

ঘটনার তিন দিন পর রায়পুরা থানায় মোট ১৫০ জনের নাম উল্লেখ করে দুটি হত্যা মামলা করা হয়। একটি মামলার বাদী নিহত আমির ও বাদলের ছোট ভাই ইকবাল মিয়া। এজাহারে ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২৫ জনকে আসামি করেন তিনি। অপর মামলার বাদী নিহত ফিরোজা বেগমের ভাই এরশাদ মিয়া। এজাহারে ১৩২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪০ জনকে আসামি করেছেন তিনি। দুটি মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে প্রতিপক্ষের নেতা হানিফ মিয়া ওরফে হানিফ মাস্টারকে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সায়েদাবাদ ও বালুরচর এলাকাবাসীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিল। সায়েদাবাদ গ্রুপের হানিফ মাস্টারের নেতৃত্বে সংঘর্ষের দিন অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে গুলি চালানো হয়েছিল। তাঁদের ধারণা, নরসিংদী কারাগার থেকে ছিনিয়ে আনা অস্ত্র দিয়েই সেদিন গুলি চালানো হয়েছিল। তাঁদের গুলিতে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছিলেন। সেদিনই ছয়জন মারা গেছেন। ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালের আইসিইউয়ে এখনো মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন আরও পাঁচজন।
নিহত জুনাইদ মিয়ার বাবা শাহীন মিয়া বলেন, ‘আমার ছেলে নবম শ্রেণিতে পড়ত। ওই দিন স্কুলে যাওয়ার সময় জুনাইদকে গুলি করা হয়। বাচ্চা একটা ছেলে, তাকেও গুলি করে মারতে হলো। আমি তাদের বিচার চাই।’

মামলার বাদী ইকবাল মিয়া বলেন, ‘মামলা করার ছয় দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত একজন আসামিকেও গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। আমরা আসামিদের গ্রেপ্তার দেখতে চাই, তাদের বিচারের আওতায় আনা হয়েছে দেখতে চাই।’

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে হানিফ মিয়া ওরফে হানিফ মাস্টারের ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিয়ে বন্ধ পাওয়া যায়।

রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাফায়েত হোসেন জানান, মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। দ্রুতই তাঁদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।