মোংলায় ব্যবসায়ী নিখোঁজের এক মাস পর অপহরণের মামলা
বাগেরহাটের মোংলা থেকে ব্যবসায়ী মাহে আলম নিখোঁজের ঘটনার এক মাস পর থানায় অপহরণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে মামলা দায়েরের পর একমাত্র আসামি মোশাররফ হোসেনকে (৪৮) গ্রেপ্তার করেছে মোংলা থানা-পুলিশ। এর আগে ৭ মে বাগেরহাটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আমলি আদালত-২) মোংলা থানাকে মামলা নিতে নির্দেশ দেন।
মাহে আলমের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ব্যবসায়ী মাহে আলম গত ১০ এপ্রিল সকাল ৯টায় মোংলা বাজারে যাওয়ার উদ্দেশে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে তাঁর ছোট ছেলে সুমন রানা ১৪ এপ্রিল থানায় নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। মোংলার মামারঘাট এলাকায় পৌরসভার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে ১০ এপ্রিল সকালে মাহে আলমকে দেখা যায়। সে সময় তাঁর পরনে নীল সাদা প্রিন্টের হাফহাতা শার্ট ও হাতে একটি শপিং ব্যাগ দেখা যায়। সেই ফুটেছে ট্রেলার মাঝি মোশাররফকে মাহে আলমের হাত ধরে বোটে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
মোশাররফ তাঁকে অপহরণ করে সুন্দরবনের করমজলে নিয়ে যান অভিযোগ করে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে মোংলা থানায় মামলা করতে চাইলে থানা মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায় বলে গত ২৯ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে তাঁর পরিবার। পরে ২ মে মাহে আলমের ছোট ছেলে সুমনা রানা বাগেরহাটের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-২–এ থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণের আরজি জানায়। আদালত মোংলা থানাকে ১৫৪ ধারায় এজাহারভুক্ত নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ডভুক্ত করার জন্য আদেশ দেন।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শামসুদ্দিন বলেন, মামলার পরই অভিযান চালিয়ে মোশাররফকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে বাগেরহাট আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে মাহে আলম নিখোঁজের পর ১৩ এপ্রিল রাতে সুন্দরবনের করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্র থেকে অর্ধগলিত একটি লাশ উদ্ধার করা হয়। ১৪ এপ্রিল দাকোপ থানা–পুলিশ খুলনা মেডিকেল কলেজে লাশটির ময়নাতদন্ত শেষে ৭ এপ্রিল সুন্দরবনে নিখোঁজ জেলে হিলটন নাথের পরিবারের সদস্যদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। খ্রিষ্টধর্মীয় রীতি অনুযায়ী হিলটনের পরিবার মোংলা উপজেলার পশ্চিম চিলা গ্রামে ১৫ এপ্রিল ওই লাশের শেষকৃত্য করে।
ওই ঘটনায় দাকোপ থানায় হত্যা ও লাশ গুম করার অভিযোগে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন হিলটন নাথের মা বীথিকা নাথ। এর মধ্যে নিখোঁজ ব্যবসায়ী মাহে আলমের পরিবারও ছবি দেখে লাশটি দাবি করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দাকোপ থানা আদালতে ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন জানায়। খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ‘গ’ অঞ্চল খুলনার আদেশে ৯ মে ঢাকার সিআইডি ল্যাবে হিলটন নাথের মা বীথিকা নাথ ও মাহে আলমের ছোট ছেলে সুমন রানা নমুনা দেন।
দাকোপ থানার পরিদর্শক শেখ শাহিনুর বলেন, দুই পরিবারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ডিএনএ পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার প্রতিবেদন পেতে একটু সময় লাগবে।