নৌকার মঞ্চের দিকে জুতা নিয়ে তেড়ে যাওয়া যুবককে পিটুনি, পুলিশে সোপর্দ
নোয়াখালী-২ (সেনবাগ ও সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের পথসভা মঞ্চের দিকে জুতা নিয়ে তেড়ে যাওয়ার অভিযোগে মো. আলাউদ্দিন (৩২) নামের এক যুবককে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে সেনবাগ উপজেলার কেশারপাড় ইউনিয়নের দমদমা বাজারে ওই ঘটনা ঘটে।
অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে আলাউদ্দিনকে আওয়ামী লীগের কর্মীরা ধরে পিটুনি দেন। পরে সেনবাগ থানার পুলিশের কাছে তাঁকে সোপর্দ করা হয়। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, তবে আলাউদ্দিনের স্বজনদের দাবি, তিনি দীর্ঘদিন ধরে মানসিক রোগে ভুগছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, পথসভার মঞ্চে সংসদ সদস্য ও নৌকার প্রার্থী মোরশেদ আলম, সেনবাগ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক গোলাম কবিরসহ দলীয় নেতারা বসে ছিলেন। মাইকে বক্তা হিসেবে ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফার নাম ঘোষণা করা হচ্ছিল। এমন সময় সভামঞ্চের সামনে থাকা দলীয় নেতা–কর্মীদের সরিয়ে পেছনের দিক থেকে এক যুবক জুতা হাতে মঞ্চের দিকে তেড়ে যাচ্ছেন। তখন দলীয় নেতা–কর্মীরা তাঁকে ধরে পিটুনি দেন। পরে তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে জানা যায় ওই যুবকের নাম মো. আলাউদ্দিন। তিনি সেনবাগের মধ্য কেশারপাড় গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বাবার নাম মফিজুর রহমান।
আলাউদ্দিনের চাচাতো ভাই দ্বীন মোহাম্মদ ওরফে দিদার দাবি করেন, তাঁর চাচাতো ভাই আলাউদ্দিন প্রবাসী ছিলেন। মানসিক সমস্যা দেখা দেওয়ায় ৮ থেকে ১০ বছর আগে তাঁকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর বাড়িতে থাকা তাঁর দুই ভাই তাঁকে কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে মানসিক রোগের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন, কিন্তু কোনো ফল হয়নি। তিনি প্রায় সময়ই মানুষকে মারধর করেন, গালমন্দ করেন। কিছুদিন আগে তিনি স্থানীয় মসজিদের ইমামকে মারধর করেছিলেন। তাঁর মানসিক অসুস্থতার কাগজপত্র থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনি ধরেননি। সভামঞ্চে উপস্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম কবির বলেন, ‘আমি দাঁড়ানো ছিলাম। মাইক্রোফোন হাতে ছিল। খেয়াল করিনি। হঠাৎ ওই ছেলে জুতা নিক্ষেপের চেষ্টা করে। তখন উপস্থিত নেতা–কর্মীরা তাকে ধরে মঞ্চের পশ্চিম পাশে নিয়ে কিছু উত্তম-মধ্যম দেন। পরে জানলাম, ওই ছেলের নাকি মানসিক সমস্যা আছে।’
সেনবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল মজিদ প্রথম আলোকে বলেন, আলাউদ্দিনকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। পথসভার মঞ্চের কাছে কী ঘটেছিল, তা বিস্তারিত জানেন না। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।