নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার ১৩১ মাস উপলক্ষে মোমশিখা প্রজ্বালন অনুষ্ঠানে রফিউর রাব্বি অভিযোগ করে বলেছেন, কয়েক দিন পর ত্বকী হত্যার ১১ বছর পূর্ণ হবে, অথচ আজও র্যাবের তৈরি করে রাখা অভিযোগপত্রটি আদালতে পেশ করা হয়নি। ত্বকীর ঘাতকদের সরকার বারবার পুরস্কৃত করেছে। ঘাতকেরা যখন সরকারের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থাকে, তখন কোনো অপরাধীকেই আইনের আওতায় আসতে হয় না। ত্বকী, সাগর-রুনি ও তনু হত্যার বিচার না করা ইতিহাসে এই সরকারের কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে মোমশিখা প্রজ্বালন কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন রফিউর রাব্বি। ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচারের দাবি জানিয়ে প্রতি মাসের ৮ তারিখে ধারাবাহিকভাবে মোমশিখা প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।
সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল ইসলামের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহার সঞ্চালনায় সমাবেশে নিহত ত্বকীর বাবা ছাড়াও বক্তব্য দেন খেলাঘরের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি রথীন চক্রবর্তী, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ, দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক দীপু, বাসদ জেলা কমিটির আহ্বায়ক নিখিল দাস, সিপিবির শহর সভাপতি আবদুল হাই, ন্যাপ জেলা সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলন জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি সভাপতি দুলাল সাহা প্রমুখ।
বক্তব্যে সাগর-রুনি হত্যার বিষয়টিও তুলে ধরেন রফিউর রাব্বি। তিনি বলেন, ‘তিন দিন পর সাগর-রুনি হত্যার এক যুগ পূর্ণ হচ্ছে। অথচ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তখন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের কথা বলেছিলেন। আদালত থেকে ১০৫ বার সময় নিলেও অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয় নাই। ঘাতকেরা যখন সরকারের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থাকে, তখন কোনো অপরাধীকেই আইনের আওতায় আসতে হয় না। ত্বকী, সাগর-রুনি ও তনু হত্যার বিচার না করা ইতিহাসে এই সরকারের কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে।’
২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুদিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী শাখা খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। এর পর থেকে ত্বকীর হত্যার বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।