পুলিশের বিরুদ্ধে বাউলগানের আসর বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার একটি বাউলগানের আসর বন্ধ করে দিয়ে সেখান থেকে বাদ্যযন্ত্র জব্দ করে থানায় নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টার দিকে ফতুল্লার কড়ইতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় মুচলেকা দিয়ে বাদ্যযন্ত্রগুলো ফেরত এনেছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বাউল সমিতির ফতুল্লা শাখার সভাপতি দেওয়ান রাসেল প্রধান।
দেওয়ান রাসেল জানান, মঙ্গলবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনূর আলমের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ সদস্য বাদ্যযন্ত্রগুলো জব্দ করে থানায় নিয়ে যান। এ বিষয়ে বুধবার সংগঠনটির ফতুল্লা থানা শাখার পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়।
ঘটনার বিষয়ে দেওয়ান রাসেল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বাউলদের নিয়ে গান করছিলাম। মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি ফোর্সসহ সমিতিতে আসেন। ওসি আমাদের গান বন্ধ করে দিয়ে সংগঠনের সংগীতের সরঞ্জাম ঢোল, হারমোনিয়াম, প্যাড, ড্রাম জব্দ করে নিয়ে যান। আমরা তখন ওসির কাছে জানতে চাই, আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কী। জবাবে তিনি জানান, রাতে বাউলগানের আসর বসার ফলে সড়কে চুরি, ছিনতাই ও মাদকসেবীদের উৎপাত বেড়ে যাচ্ছে। চাইলে দিনভর গান করা যাবে কিন্তু রাতে গানের আসর বসানো যাবে না। অনেক আকুতি–মিনতির পরও পুলিশ আমাদের বাদ্যযন্ত্র ফিরিয়ে না দিয়ে থানায় নিয়ে যায়। পরে বুধবার সন্ধ্যায় থানায় সাদা কাগজে মুচলেকা দিয়ে আমরা বাদ্যযন্ত্রগুলো ফিরিয়ে আনি।’
এ বিষয়ে ওসি শাহীনূর বলেন, ‘শহরে চুরি, ছিনতাই, মাদক বেড়ে গেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে আমরা জেনেছি, রাত দুইটা-তিনটা পর্যন্ত বাউলগানের নামে অসামাজিক কার্যক্রম চলে। চোর, ছিনতাইকারীসহ অপরাধীরা এসব আসরে বসে থাকেন। পরে সুবিধামতো সময়ে তাঁরা অপরাধ সংঘটিত করেন। আমরা তাঁদের বলেছি, বাউলগান নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আপনারা যদি এই নিশ্চয়তা দিতে পারেন যে আসরে কোনো চোর, ছিনতাইকারী যাবে না, তাহলে গানের আসর চলতে পারে। তারা তখন বলেন, আমরা কীভাবে তার নিশ্চয়তা দেব। আমরা তখন তাঁদের গানের আসর বন্ধ রাখতে বলেছি। আমরা বাদ্যযন্ত্র জব্দ করিনি। থানায় নিয়ে এসেছিলাম, পরে দিয়ে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, ‘বাউলগানের আসর নিয়ে স্থানীয় লোকজনের বিভিন্ন অভিযোগ আমরা পেয়েছি। তবে আমরা বাউলগানের আসর বন্ধ করার পক্ষে নই। কিন্তু বাউলগানের আসরকে কেন্দ্র করে কোনো পাবলিক নুইসেন্স যাতে না ঘটে, সে ব্যাপারে আয়োজকদের বলেছি।’