ভোলায় আর্জেন্টিনা সমর্থক দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, তরুণ নিহত

নিহত মো. হৃদয়
ছবি: সংগৃহীত

ভোলার সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের চেউয়াখালী গ্রামে আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের সমর্থকদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। মো. হৃদয় (২০) নামের ওই তরুণ গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন। তাঁকে আজ বুধবার ভোর ৫টা ২০ মিনিটে ভোলার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

নিহত হৃদয় উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভ্যানচালক ইব্রাহীম হোসেনের ছেলে।

ভোলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকির প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, হৃদয়ের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ সংঘর্ষে আহত আরও সাতজন একই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের পুলিশি পাহারায় চিকিৎসা চলছে।

নুডলস খাওয়া নিয়ে আর্জেন্টিনা সমর্থক মো. আশিকের পক্ষের সঙ্গে মো. আকবরের (লাল্টু) পক্ষের কথা–কাটাকাটি হয়। এ সময় আশিক আকবরকে চড় মারেন।

গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৩ ডিসেম্বর বিশ্বকাপ ফুটবলের আর্জেন্টিনা–অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ম্যাচের আগে চেউয়াখালী গ্রামের আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা নুডলস খাওয়ার আয়োজন করেন। নুডলস খাওয়া নিয়ে আর্জেন্টিনা সমর্থক মো. আশিকের পক্ষের সঙ্গে মো. আকবরের (লাল্টু) পক্ষের কথা–কাটাকাটি হয়। এ সময় আশিক আকবরকে চড় মারেন। এ ঘটনা কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে ইয়ামিন নামের একজনের মাথা ফেটে যায়।

এ ঘটনার জেরে গতকাল রাত নয়টার দিকে ধনিয়ার চেউয়াখালী এলাকায় তাফসির মাহফিল চলাকালে আকবরের পক্ষ বহিরাগত যুবকদের নিয়ে এসে আশিকের পক্ষের ওপর হামলা করে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ হয়। প্রায় এক ঘণ্টার সংঘর্ষে আশিকের পক্ষের তালহা, হৃদয়, আশিক, রুবেল এবং আকবরের পক্ষের আকবর, মহিউদ্দিন, নয়ন, শাহাবুদ্দিন ও অলি আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৭ জনকে রাত ১১টার দিকে ভোলার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত আরেকজন স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হৃদয় সংঘর্ষে আহত হয়ে পুকুরের পানিতে পড়ে ছিলেন। তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ভোররাতের দিকে তাঁকে অচেতন অবস্থায় পুকুরে পাওয়া যায়। তাঁকে আজ ভোর ৫টা ২০ মিনিটে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হৃদয় মারা যান।

নিহত হৃদয়ের বাবা ইব্রাহীম মিয়া আহাজারি করে বলেন, ভ্যানগাড়ি চালিয়ে ছেলেকে বিএ পাস করিয়েছেন। আজ তাঁর সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। তিনি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চান।